Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা আল বাকারা আয়াত ৩৯

Qur'an Surah Al-Baqarah Verse 39

আল বাকারা [২]: ৩৯ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

وَالَّذِيْنَ كَفَرُوْا وَكَذَّبُوْا بِاٰيٰتِنَآ اُولٰۤىِٕكَ اَصْحٰبُ النَّارِ ۚ هُمْ فِيْهَا خٰلِدُوْنَ ࣖ (البقرة : ٢)

wa-alladhīna
وَٱلَّذِينَ
And those
এবং যারা
kafarū
كَفَرُوا۟
who disbelieve[d]
অবিশ্বাস করবে
wakadhabū
وَكَذَّبُوا۟
and deny
ও মিথ্যা মনে করবে
biāyātinā
بِـَٔايَٰتِنَآ
Our Signs
আমার নিদর্শনসমূহকে
ulāika
أُو۟لَٰٓئِكَ
those
তারা
aṣḥābu
أَصْحَٰبُ
(are the) companions
অধিবাসী (হবে)
l-nāri
ٱلنَّارِۖ
(of) the Fire;
(জাহান্নামের) আগুনের
hum
هُمْ
they
তারা
fīhā
فِيهَا
in it
তার মধ্যে
khālidūna
خَٰلِدُونَ
(will) abide forever"
চিরস্থায়ী হবে''

Transliteration:

Wallazeena kafaroo wa kaz zabooo bi aayaatinaa ulaaa'ika Ashaabun Naari hum feehaa khaalidoon (QS. al-Baq̈arah:39)

English Sahih International:

And those who disbelieve and deny Our signs – those will be companions of the Fire; they will abide therein eternally." (QS. Al-Baqarah, Ayah ৩৯)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

আর যারা কুফরী করবে ও আমার নিদর্শনগুলোকে অস্বীকার করবে, তারাই জাহান্নামী; সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। (আল বাকারা, আয়াত ৩৯)

Tafsir Ahsanul Bayaan

আর যারা (কাফের) অবিশ্বাস করে ও আমার নিদর্শনকে মিথ্যাজ্ঞান করে, তারাই অগ্নিকুণ্ডবাসী সেখানে তারা চিরকাল থাকবে।’[১]

(১) দুআ কবুল করা সত্ত্বেও মহান আল্লাহ তাঁদেরকে পুনরায় জান্নাতে আবাদ না করে দুনিয়াতে থেকেই জান্নাত লাভের চেষ্টা করতে বলেন। আর আদম (আঃ)-এর মাধ্যমে সকল আদম-সন্তানকে জান্নাত লাভের পথ বলে দেওয়া হচ্ছে যে, আম্বিয়া (আলাইহিমুস্ সালাম)-এর মাধ্যমে আমার হিদায়াত (জীবন পরিচালনার বিধি-বিধান) তোমাদের নিকট আসবে। সুতরাং যে তা গ্রহণ করবে, সে জান্নাতের অধিকারী হবে। আর যে তা গ্রহণ করবে না, সে আল্লাহর শাস্তির যোগ্য হবে।

'তাদের কোন ভয় নেই' -এর সম্পর্ক আখেরাতের সাথে। অর্থাৎ, আখেরাত সংক্রান্ত যে বিষয়ই তাদের সামনে আসবে, তাতে তাদের কোন ভয় থাকবে না। আর 'তারা দুঃখিত হবে না'-এর সম্পর্ক দুনিয়ার সাথে। অর্থাৎ, দুনিয়া সংক্রান্ত যা কিছু তাদের হাতছাড়া হয়ে গেছে, সে ব্যাপারে তারা দুঃখিত হবে না। যেমন অন্যত্র বলা হয়েছে,

{فَمَنِ اتَّبَعَ هُدَايَ فَلا يَضِلُّ وَلا يَشْقَى} (طـه; (১২৩)

"যে আমার বর্ণিত পথ অনুসরণ করবে, সে (দুনিয়াতে) পথভ্রষ্ট হবে না এবং (আখেরাতে) দুঃখ-কষ্টও পাবে না।" (ইবনে কাসীর) অর্থাৎ, {لاَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلاَ هُمْ يَحْزَنُوْنَ} এই মর্যাদা সকল সত্যবাদী মু'মিন লাভ করবে। এটা কোন এমন মর্যাদা নয় যে, কেবল আল্লাহর অলীরাই তা পাবে। অনুরূপ এই 'মর্যাদা'র তাৎপর্যও অন্য কিছু নয়, বরং প্রত্যেক মু'মিন ও আল্লাহভীরুই আল্লাহর অলী। 'আল্লাহর আউলিয়া' কোন ভিন্ন সৃষ্টি নয়। তবে হ্যাঁ, অলীদের মর্যাদা ও দর্জায় তফাৎ থাকতে পারে।

Tafsir Abu Bakr Zakaria

আর যারা কুফরী করেছে এবং আমাদের আয়াতসমূহে [১] মিথ্যারোপ করেছে তারাই আগুনের অধিবাসী, সেখানে তারা স্থায়ী হবে [২]।

[১] আরবীতে “আয়াত” এর আসল মানে হচ্ছে নিশানী বা আলামত। এই নিশানী কোন জিনিসের পক্ষ থেকে পথ নির্দেশ দেয়। কুরআনে এই শব্দটি চারটি ভিন্ন ভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। কোথাও এর অর্থ হয়েছে নিছক আলামত বা নিশানী। কোথাও প্রাচীন ধ্বংসাবশেষের নিদর্শনসমূহকে বলা হয়েছে আল্লাহ্‌র আয়াত। কারণ এ বিশ্ব জাহানের অসীম ক্ষমতাধর আল্লাহ্‌র সৃষ্ট প্রতিটি বস্তুই তার বাহ্যিক কাঠামোর অভ্যন্তরে নিহিত সত্যের প্রতি ইঙ্গিত করছে। কোথাও নবী-রাসূলগণ যেসব মু'জিযা দেখিয়েছেন সেগুলোকে বলা হয়েছে আল্লাহ্‌র আয়াত। কারণ এ নবী-রাসূলগণ যে এ বিশ্ব জাহানের সার্বভৌম ক্ষমতাসম্পন্ন প্রভূর প্রতিনিধি এ মু'জিযাগুলো ছিল আসলে তারই প্রমাণ ও আলামত। কোথাও কুরআনের বাক্যগুলোকে আয়াত বলা হয়েছে। কারণ, এ বাক্যগুলো কেবল সত্যের দিকে পরিচালিত করেই ক্ষান্ত নয়, বরং প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে যে কোন কিতাবই এসেছে, তার কেবল বিষয়বস্তুই নয়, শব্দ, বর্ণনাভঙ্গি ও বাক্য গঠনরীতির মধ্যেও এ গ্রন্থের মহান মহিমান্বিত রচয়িতার অতুলনীয় বৈশিষ্ট্যের নিদর্শনসমূহ সুস্পষ্টভাবে অনুভূত হয়েছে। কোথায় আয়াত’ শব্দটির কোন অর্থ গ্রহণ করতে হবে তা বাক্যের পূর্বাপর আলোচনা থেকে সর্বত্র সুস্পষ্টভাবে জানা যায়।

[২] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আর যারা জাহান্নামবাসী হিসেবে সেখানকার অধিবাসী হবে, তারা সেখানে মরবেও না বাঁচবেও না” [মুসলিম; ১৮৫] অর্থাৎ কাফের, মুশরিক ও মুনাফিকরা সেখানে স্থায়ী হবে। সুতরাং তাদের জাহান্নামও স্থায়ী।

Tafsir Bayaan Foundation

আর যারা কুফরী করেছে এবং আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে, তারাই আগুনের অধিবাসী। তারা সেখানে স্থায়ী হবে।

Muhiuddin Khan

আর যে লোক তা অস্বীকার করবে এবং আমার নিদর্শনগুলোকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার প্রয়াস পাবে, তারাই হবে জাহান্নামবাসী; অন্তকাল সেখানে থাকবে।

Zohurul Hoque

“কিন্তু যারা অবিশ্বাস পোষণ করে ও আমাদের আয়াতসমূহে মিথ্যারোপ করে, তারাই হচ্ছে আগুনের বাসিন্দা, তারা তার মধ্যে থাকবে দীর্ঘকাল।”