Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা আল বাকারা আয়াত ২৬৭

Qur'an Surah Al-Baqarah Verse 267

আল বাকারা [২]: ২৬৭ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

يٰٓاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْٓا اَنْفِقُوْا مِنْ طَيِّبٰتِ مَا كَسَبْتُمْ وَمِمَّآ اَخْرَجْنَا لَكُمْ مِّنَ الْاَرْضِ ۗ وَلَا تَيَمَّمُوا الْخَبِيْثَ مِنْهُ تُنْفِقُوْنَ وَلَسْتُمْ بِاٰخِذِيْهِ اِلَّآ اَنْ تُغْمِضُوْا فِيْهِ ۗ وَاعْلَمُوْٓا اَنَّ اللّٰهَ غَنِيٌّ حَمِيْدٌ (البقرة : ٢)

yāayyuhā
يَٰٓأَيُّهَا
O you
হে
alladhīna
ٱلَّذِينَ
who
যারা
āmanū
ءَامَنُوٓا۟
believe[d]!
ঈমান এনেছ
anfiqū
أَنفِقُوا۟
Spend
ব্যয় কর তোমরা
min
مِن
from
হতে
ṭayyibāti
طَيِّبَٰتِ
(the) good things
পবিত্র জিনিসগুলো
مَا
that
যা
kasabtum
كَسَبْتُمْ
you have earned
তোমরা অর্জন করেছ
wamimmā
وَمِمَّآ
and whatever
এবং তা হতেও যা
akhrajnā
أَخْرَجْنَا
We brought forth
বের করেছি আমরা
lakum
لَكُم
for you
তোমাদের জন্য
mina
مِّنَ
from
থেকে
l-arḍi
ٱلْأَرْضِۖ
the earth
জমি
walā
وَلَا
And (do) not
এবং না
tayammamū
تَيَمَّمُوا۟
aim at
তোমরা সংকল্প করো
l-khabītha
ٱلْخَبِيثَ
the bad
নিকৃষ্ট বস্তুগুলোকে
min'hu
مِنْهُ
of it
তা থেকে
tunfiqūna
تُنفِقُونَ
you spend
ব্যয় করতে
walastum
وَلَسْتُم
while you (would) not
অথচ তোমরা নও
biākhidhīhi
بِـَٔاخِذِيهِ
take it
তা গ্রহণকারী
illā
إِلَّآ
except
এছাড়া
an
أَن
[that]
যে
tugh'miḍū
تُغْمِضُوا۟
(with) close(d) eyes
তোমরা চোখ বন্ধ করে থাক
fīhi
فِيهِۚ
[in it]
তা হতে
wa-iʿ'lamū
وَٱعْلَمُوٓا۟
and know
এবং তোমরা জেনে রেখো
anna
أَنَّ
that
যে
l-laha
ٱللَّهَ
Allah
আল্লাহ
ghaniyyun
غَنِىٌّ
(is) Self-Sufficient
অভাবমুক্ত
ḥamīdun
حَمِيدٌ
Praiseworthy
প্রশংসিত

Transliteration:

Yaaa 'ayyuhal lazeena aamanooo anfiqoo min taiyibaati maa kasabtum wa mimmaaa akhrajuaa lakum minal ardi wa laa tayammamul khabeesa minhu tunfiqoona wa lastum bi aakhizeehi illaaa an tughmidoo feeh; wa'lamooo annal laaha Ghaniyyun Hameed (QS. al-Baq̈arah:267)

English Sahih International:

O you who have believed, spend from the good things which you have earned and from that which We have produced for you from the earth. And do not aim toward the defective therefrom, spending [from that] while you would not take it [yourself] except with closed eyes. And know that Allah is Free of need and Praiseworthy. (QS. Al-Baqarah, Ayah ২৬৭)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

হে মু’মিনগণ! তোমাদের উপার্জিত উত্তম সম্পদ থেকে এবং তোমাদের জন্য ভূমি থেকে যা উৎপন্ন করেছি তাত্থেকে ব্যয় কর এবং নিকৃষ্ট বস্তু ব্যয় করার নিয়ত করো না, বস্তুতঃ তোমরা তা গ্রহণ কর না, যদি না তোমাদের চক্ষু বন্ধ করে থাক। আর জেনে রেখ, আল্লাহ অমুখাপেক্ষী, প্রশংসিত। (আল বাকারা, আয়াত ২৬৭)

Tafsir Ahsanul Bayaan

হে বিশ্বাসিগণ! তোমরা যা উপার্জন কর এবং আমি জমি হতে তোমাদের জন্য যা উৎপাদন করে থাকি, তা থেকে যা উৎকৃষ্ট, তা দান কর। [১] এমন মন্দ জিনিস দান করার সংকল্প করো না, যা তোমরা মুদিত চক্ষু ব্যতীত গ্রহণ কর না। [২] আর জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহ অভাবমুক্ত, প্রশংসিত।

[১] সাদাকা কবুল হওয়ার জন্য যেমন জরুরী হল যে, তা অনুগ্রহ প্রকাশ, কষ্ট দেওয়া এবং কপটতা থেকে পাক হতে হবে, (যেমন পূর্বের আয়াতে বলা হয়েছে) অনুরূপ এটাও জরুরী যে, তা হালাল ও পবিত্র উপার্জন থেকে হতে হবে। তাতে তা ব্যবসা-বাণ্যিজের মাধ্যমে হোক অথবা জমি ও বাগান থেকে উৎপন্ন ফসল ও ফলাদির মাধ্যমে হোক। আর "মন্দ জিনিস--" কথার প্রথম অর্থ হল, এমন জিনিস যা অবৈধ পথে উপার্জন করা হয়েছে। মহান আল্লাহ তা কবুল করেন না। হাদীসে এসেছে, "আল্লাহ পবিত্র। তাই তিনি কেবল পবিত্র জিনিসই কবুল করেন।" এর দ্বিতীয় অর্থ হল, খারাপ ও অতি নিম্নমানের জিনিস। নষ্ট হয়ে যাওয়া খারাপ জিনিসও যেন আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় না করা হয়। আর {لَنْ تَنَالُوا الْبِرَّ حَتَّى تُنْفِقُوا مِمَّا تُحِبُّونَ} আয়াতের দাবীও তা-ই। এই আয়াত নাযিল হওয়ার কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, মদীনার কোন কোন আনসার সাহাবী খারাপ হয়ে যাওয়া নিম্নমানের খেজুরগুলো সাদাকা স্বরূপ মসজিদে দিয়ে যেতেন। যার ফলে এই আয়াত নাযিল হয়। (ফাতহুল ক্বাদীরঃ তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ ইত্যাদি)

[২] অর্থাৎ, যেমন তুমি নিজের জন্য নষ্ট হয়ে যাওয়া খারাপ জিনিস নিতে পছন্দ করো না, অনুরূপ আল্লাহর পথেও ভাল ছাড়া খারাপ জিনিস ব্যয় করো না।

Tafsir Abu Bakr Zakaria

হে মুমিনগণ! তোমরা যা উপার্জন কর [১] এবং আমরা যা যমীন থেকে তোমাদের জন্য উৎপাদন করি [২] তা থেকে যা উৎকৃষ্ট তা ব্যয় কর; এবং নিকৃষ্ট বস্তু ব্যয় করার সংকল্প করো না, যদি না তোমরা চোখ বন্ধ করে থাক। আর জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহ্‌ অভাবমুক্ত, প্রশংসিত।

[১] এ থেকে কোন কোন আলেম মাসআলা চয়ন করেছেন যে, পিতা পুত্রের উপার্জন ভোগ করতে পারে, এটা জায়েয। কেননা, মহানবী রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ ‘তোমাদের সন্তান-সন্ততি তোমাদের উপার্জনের একটি অংশ। অতএব, তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে সন্তান-সন্ততির উপার্জন ভক্ষণ কর’। [আবু দাউদঃ ৩৫২৮, ৩৫২৯, ইবনে মাজাহঃ ২১৩৮]

[২] (أخْرَجْنَا) শব্দ দ্বারা ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, ওশর জমিতে (যে জমিনের উৎপন্ন শষ্যের এক-দশমাংশ ইসলামী বিধান অনুযায়ী সরকারী তহবিলে জমা দিতে হয়) যে ফসল উৎপন্ন হয়, তার এক-দশমাংশ দান করা ওয়াজিব। ‘ওশর’ ও ‘খারাজ’ ইসলামী শরীআতের দুটি পারিভাষিক শব্দ। এ দু’য়ের মধ্যে একটি বিষয় অভিন্ন। উভয়টিই ইসলামী রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ভূমির উপর আরোপিত কর। পার্থক্য এই যে, ‘ওশর’ শুধু কর নয়, এতে আর্থিক ‘ইবাদাতের দিকটিই সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ; যেমন - যাকাত। এ কারণেই ওশরকে 'যাকাতুল’-‘আরদ’ বা ‘ভূমির যাকাত' ও বলা হয়। পক্ষান্তরে ‘খারাজ’ শুধু করকে বোঝায়। এতে ‘ইবাদাতের কোন দিক নেই। মুসলিমরা ‘ইবাদাতের যোগ্য ও অনুসারী। তাই তাদের কাছ থেকে ভূমির উৎপন্ন ফসলের যে অংশ নেয়া হয়,তাকে ‘ওশর’ বলা হয়। অমুসলিমরা ‘ইবাদাতের যোগ্য নয়। তাই তাদের ভূমির উপর যে কর ধাৰ্য্য করা হয়, তাকে খারাজ বলা হয়। যাকাত ও ওশরের মধ্যে আরও পার্থক্য এই যে, স্বর্ণ, রৌপ্য ও পণ্য সামগ্রীর উপর বছরান্তে যাকাত ওয়াজিব হয়, কিন্তু ওশরী জমিতে উৎপাদনের সাথে সাথেই ওশর ওয়াজিব হয়ে যায়। দ্বিতীয় পার্থক্য এই যে, জমিনে ফসল উৎপন্ন না হলে ওশর দিতে হয় না। কিন্তু পণ্য দ্রব্যে ও স্বর্ণ-রৌপ্যে মুনাফা না হলেও বছরান্তে যাকাত ফরয হবে।

Tafsir Bayaan Foundation

হে মুমিনগণ, তোমরা ব্যয় কর উত্তম বস্ত্ত, তোমরা যা অর্জন করেছ এবং আমি যমীন থেকে তোমাদের জন্য যা উৎপন্ন করেছি তা থেকে এবং নিকৃষ্ট বস্ত্তর ইচ্ছা করো না যে, তা থেকে তোমরা ব্যয় করবে। অথচ চোখ বন্ধ করা ছাড়া যা তোমরা গ্রহণ করো না। আর জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহ অভাবমুক্ত, সপ্রশংসিত।

Muhiuddin Khan

হে ঈমানদারগণ! তোমরা স্বীয় উপার্জন থেকে এবং যা আমি তোমাদের জন্যে ভূমি থেকে উৎপন্ন করেছি, তা থেকে উৎকৃষ্ট বস্তু ব্যয় কর এবং তা থেকে নিকৃষ্ট জিনিস ব্যয় করতে মনস্থ করো না। কেননা, তা তোমরা কখনও গ্রহণ করবে না; তবে যদি তোমরা চোখ বন্ধ করে নিয়ে নাও। জেনে রেখো, আল্লাহ অভাব মুক্ত, প্রশংসিত।

Zohurul Hoque

ওহে যারা ঈমান এনেছ! খরচ করো ভালো বিষয়বস্তু যা তোমরা উপার্জন কর, আর যা আমরা তোমাদের জন্য মাটি থেকে উৎপাদন করে থাকি তা থেকে, আর যা নিকৃষ্ট তা থেকে খরচ করতে সংকল্প করো না যখন তোমরা নিজেরা তার গ্রহণকারী হও না, এর প্রতি উপেক্ষা করা ছাড়া। আর জেনে রেখো, নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ স্বয়ংসমৃদ্ধ, পরম প্রশংসিত।