Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা আল বাকারা আয়াত ১১৫

Qur'an Surah Al-Baqarah Verse 115

আল বাকারা [২]: ১১৫ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

وَلِلّٰهِ الْمَشْرِقُ وَالْمَغْرِبُ فَاَيْنَمَا تُوَلُّوْا فَثَمَّ وَجْهُ اللّٰهِ ۗ اِنَّ اللّٰهَ وَاسِعٌ عَلِيْمٌ (البقرة : ٢)

walillahi
وَلِلَّهِ
And for Allah
এবং আল্লাহরই জন্যে
l-mashriqu
ٱلْمَشْرِقُ
(is) the east
পূর্ব
wal-maghribu
وَٱلْمَغْرِبُۚ
and the west
ও পশ্চিম
fa-aynamā
فَأَيْنَمَا
so wherever
অতএব যে দিকেই
tuwallū
تُوَلُّوا۟
you turn
মুখ ফিরাও তোমরা
fathamma
فَثَمَّ
[so] there
অতঃপর সেখানেই
wajhu
وَجْهُ
(is the) face
দিক
l-lahi
ٱللَّهِۚ
(of) Allah
আল্লাহ্‌র
inna
إِنَّ
Indeed
নিশ্চয়ই
l-laha
ٱللَّهَ
Allah
আল্লাহ্‌
wāsiʿun
وَٰسِعٌ
(is) All-Encompassing
সর্বব্যাপী
ʿalīmun
عَلِيمٌ
All-Knowing
সবকিছু জানেন

Transliteration:

Wa lillaahil mashriqu walmaghrib; fa aynamaa tuwalloo fasamma wajhullaah; innal laaha waasi'un Aleem (QS. al-Baq̈arah:115)

English Sahih International:

And to Allah belongs the east and the west. So wherever you [might] turn, there is the Face of Allah. Indeed, Allah is all-Encompassing and Knowing. (QS. Al-Baqarah, Ayah ১১৫)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

পূর্ব পশ্চিম আল্লাহরই, সুতরাং তোমরা যে দিকেই মুখ কর না কেন, সেদিকেই আছে আল্লাহর চেহারা, আল্লাহ সুবিস্তৃত, সর্বজ্ঞ। (আল বাকারা, আয়াত ১১৫)

Tafsir Ahsanul Bayaan

পূর্ব ও পশ্চিম (সর্বদিক) আল্লাহরই। সুতরাং যে দিকেই মুখ ফেরাও, সে দিকই আল্লাহরই দিক (মুখমন্ডল)। [১] নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বদিক পরিবেষ্টনকারী, সর্বজ্ঞ।

[১] হিজরতের পর মুসলিমরা বায়তুল মুক্বাদ্দাসের দিকে মুখ করে নামায পড়ত। ফলে এ নিয়ে তাদের মনে ব্যথা ছিল। ঠিক সেই সময়ে এই আয়াত অবতীর্ণ হয়। কেউ বলেন, এ আয়াত তখন অবতীর্ণ হয়েছিল, যখন বায়তুল মুক্বাদ্দাস থেকে পুনরায় কা'বার দিকে মুখ করে নামায পড়ার নির্দেশ হয় এবং এ ব্যাপারে ইয়াহুদীরা বিভিন্ন রকমের মন্তব্য করে। আবার কেউ বলেছেন, এর অবতীর্ণ হওয়ার কারণ হল, সফরে বাহনের উপর নফল নামায পড়ার অনুমতি দান। অর্থাৎ, সওয়ারীর মুখ যেদিকেই থাকুক না কেন সেদিকে মুখ করেই নামায পড়া যাবে। কখনো কয়েকটি কারণ একত্রে জমায়েত হয়ে যায় এবং সেই সমস্ত কারণের (শরীয়তী) বিধান বর্ণনায় একটিই আয়াত নাযিল হয়ে থাকে। আর তখন এই শ্রেণীর আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার কারণ বর্ণনার পশ্চাতে একাধিক বর্ণনা বর্ণিত হয়। কোন বর্ণনায় একটি কারণ তুলে ধরা হয়, আবার অপর এক বর্ণনায় অন্য একটি কারণ তুলে ধরা হয়। আলোচ্য আয়াতটিও সেই শ্রেণীভুক্ত। (আহসানুত তাফাসীর থেকে সংগৃহীত সার-সংক্ষেপ)

Tafsir Abu Bakr Zakaria

আর পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহ্‌রই সুতরাং যেদিকেই তোমরা মুখ ফিরাও না কেন, সেদিকই আল্লাহ্‌র দিক [১]। নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ সর্বব্যাপী, সর্বজ্ঞ [২]।

[১] (وَجْهُ اللّٰه) শব্দের শাব্দিক অর্থ হচ্ছে, আল্লাহ্‌র চেহারা। মুসলিমদের আকীদা বিশ্বাস হলো এই যে, আল্লাহ্‌র চেহারা রয়েছে। তবে তা সৃষ্টির কারও চেহারার মত নহে। কিন্তু এ আয়াতের দ্বারা উদ্দেশ্য হলো - সকল দিকই যেহেতু আল্লাহ্‌র সুতরাং মুসল্লী পূর্ব ও পশ্চিম যেদিকেই মুখ ফিরাক না কেন। সেদিকেই আল্লাহ্‌র কিবলা রয়েছে। কেউ কেউ এ আয়াতটিকে আল্লাহ্ তা'আলার সিফাত মুখমণ্ডল বা চেহারা সাব্যস্ত করার জন্য দলীল হিসেবে পেশ করে থাকেন। মূলতঃ এ আয়াতটিতে ওয়াজহ’ শব্দটি দিক বা কেবলা বুঝানোর জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। তাই শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রাহিমাহুল্লাহ এ আয়াতটিকে সিফাতের আয়াতের মধ্যে গণ্য করাকে ভুল আখ্যায়িত করেছেন। [দেখুন - মাজমু ফাতাওয়াঃ ২/৪২৯, ৩/১৯৩, ৬/১৫-১৬]

কোন কোন মুফাসসির (فَاَيْنَمَا تُوَلُّوْا وَجْهُ اللّٰهِ) আয়াতকে এই নফল সালাতেরই বিধান বলে সাব্যস্ত করেছেন। কিন্তু স্মরণ রাখা দরকার যে, এই বিধান সে সমস্ত যানবাহনের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, যাতে সওয়ার হয়ে চলার সময় কেবলার দিকে মুখ করা কঠিন। পক্ষান্তরে যেসব যানবাহনে সওয়ার হলে কেবলার দিকে মুখ করা কঠিন নয়, যেমন রেলগাড়ী, সামুদ্রিক জাহাজ, উড়োজাহাজ ইত্যাদিতে নফল সালাতেও কেবলার দিকেই মুখ করতে হবে। তবে সালাতরত অবস্থায় রেলগাড়ী অথবা জাহাজের দিক পরিবর্তন হয়ে গেলে এবং আরোহীর পক্ষে কেবলার দিকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার অবকাশ না থাকলে সে অবস্থায়ই সালাত পূর্ণ করবে। এমনিভাবে কেবলার দিক সম্পর্কে সালাত আদায়কারীর জানা না থাকলে, রাতের অন্ধকারে দিক নির্ণয় করা কঠিন হলে এবং বলে দেয়ার লোক না থাকলে সেখানেও সালাত আদায়কারী অনুমান করে যেদিকেই মুখ করবে, সেদিকই তার কেবলা বলে গণ্য হবে [ তাফসীরে মাআরিফুল কুরআন ]

[২] এখানে কেবলামুখী হওয়ার সম্পূর্ণ স্বরূপ বর্ণনা করে দেয়া হয়েছে যে, এর উদ্দেশ্য (নাউযুবিল্লাহ) বায়তুল্লাহ অথবা বায়তুল- মুকাদ্দাসের পূজা করা নয়। সমস্ত সৃষ্টিজগত তাঁর কাছে অতি ছোট। এরপরও বিভিন্ন তাৎপর্যের কারণে বিশেষ স্থান অথবা দিককে কেবলা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। আয়াতের শেষে মহান আল্লাহ্‌র দুটি গুরুত্বপূর্ণ গুণবাচক নাম উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথমে বলা হয়েছে, তিনি (وَاسِعٌ) এ শব্দটির দুটি অর্থ রয়েছে। এক. প্রাচুর্যময়; অর্থাৎ তাঁর দান অপরিসীম। তিনি যাকে ইচ্ছা তার কর্মকাণ্ড দেখে বিনা হিসেবে দান করবেন। পূর্ব বা পশ্চিম তাঁর কাছে মুখ্য উদ্দেশ্য নয়। তিনি দেখতে চাইছেন যে, কে তার কথা শুনে আর কে শুনে না। দুই. (وَاسِعٌ) শব্দটির দ্বিতীয় অর্থ হচ্ছে, সর্বব্যাপী। অর্থাৎ তিনি যেহেতু সবদিক ও সবস্থান সম্পর্কে পূর্ণ খবর রাখেন সুতরাং তাঁর জন্য কোন কাজটি করা হল সেটা তিনি ভাল করেই জানেন। সে অনুসারে তিনি তাঁর বান্দাকে পুরস্কৃত করবেন। এ অর্থের সাথে পরে উল্লেখিত দ্বিতীয় গুণবাচক নাম (عَلِيْمٌ) শব্দটি বেশী উপযুক্ত।

Tafsir Bayaan Foundation

আর পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহরই। সুতরাং তোমরা যে দিকেই মুখ ফিরাও, সে দিকেই আল্লাহর চেহারা। নিশ্চয় আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।

Muhiuddin Khan

পূর্ব ও পশ্চিম আল্লারই। অতএব, তোমরা যেদিকেই মুখ ফেরাও, সেদিকেই আল্লাহ বিরাজমান। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বব্যাপী, সর্বজ্ঞ।

Zohurul Hoque

আর আল্লাহ্‌রই পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চল। অতএব যেদিকে তোমরা ফেরো সে-দিকেই আল্লাহ্‌র মুখ। নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ সর্বব্যাপক, সর্বজ্ঞাতা।