Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা আল বাকারা আয়াত ১০

Qur'an Surah Al-Baqarah Verse 10

আল বাকারা [২]: ১০ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

فِيْ قُلُوْبِهِمْ مَّرَضٌۙ فَزَادَهُمُ اللّٰهُ مَرَضًاۚ وَلَهُمْ عَذَابٌ اَلِيْمٌ ۢ ەۙ بِمَا كَانُوْا يَكْذِبُوْنَ (البقرة : ٢)

فِى
In
মধ্যে আছে
qulūbihim
قُلُوبِهِم
their hearts
তাদের অন্তর সমূহের
maraḍun
مَّرَضٌ
(is) a disease
রোগ (আছে)
fazādahumu
فَزَادَهُمُ
so has increased them
বৃদ্ধি করলেন তাই (আরও) তাদেরকে
l-lahu
ٱللَّهُ
Allah
আল্লাহ্‌
maraḍan
مَرَضًاۖ
(in) disease
(তাদের) রোগ
walahum
وَلَهُمْ
and for them
এবং তাদের জন্য (রয়েছে)
ʿadhābun
عَذَابٌ
(is) a punishment
শাস্তি
alīmun
أَلِيمٌۢ
painful
কষ্টদায়ক
bimā
بِمَا
because
এজন্যে যে
kānū
كَانُوا۟
they used (to)
তারা ছিল
yakdhibūna
يَكْذِبُونَ
[they] lie
তারা মিথ্যা বলতো

Transliteration:

Fee quloobihim mara dun fazzdahumul laahu maradan wa lahum 'azaabun aleemum bimaa kaanoo yakziboon (QS. al-Baq̈arah:10)

English Sahih International:

In their hearts is disease, so Allah has increased their disease; and for them is a painful punishment because they [habitually] used to lie. (QS. Al-Baqarah, Ayah ১০)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

তাদের অন্তরে আছে ব্যাধি, অতঃপর আল্লাহ তাদের ব্যাধি বাড়িয়ে দিয়েছেন আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি, কারণ তারা মিথ্যেবাদী। (আল বাকারা, আয়াত ১০)

Tafsir Ahsanul Bayaan

তাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে। অতঃপর আল্লাহ তাদের ব্যাধি বৃদ্ধি করেছেন[১] ও তাদের জন্য রয়েছে কষ্টদায়ক শাস্তি, কারণ তারা মিথ্যাচারী।

[১] 'ব্যাধি' বলতে এখানে কুফরী ও নিফাক্বের (হার্দিক) ব্যাধিকে বুঝানো হয়েছে। এই ব্যাধি যদি সারানোর চিন্তা না করা হয়, তাহলে তা বাড়তে থাকে। অনুরূপ মিথ্যা বলা মুনাফিক্বদের একটি নিদর্শন; যা হতে দূরে থাকা অপরিহার্য।

Tafsir Abu Bakr Zakaria

তাদের অন্তরসমূহে রয়েছে ব্যধি। অতঃপর আল্লাহ্‌ তাদের ব্যধি আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন [১]। আর তাদের জন্য রয়েছে কষ্টদায়ক শাস্তি, কারণ তারা মিথ্যাবাদী [২]।

[১] এ আয়াতে বলা হয়েছে যে, তাদের অন্তর রোগাক্রান্ত বা অসুস্থ। তাই আল্লাহ্‌ তা'আলা তাদের এ রোগকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন। রোগ সে অবস্থাকেই বলা হয়, যে অবস্থায় মানুষ স্বাভাবিক অবস্থার বাইরে চলে যায় এবং তাদের কাজ-কর্মে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। যার শেষ পরিণাম ধ্বংস ও মৃত্যু। এ আয়াতে তাদের অন্তর্নিহিত কুফরকে রোগ বলা হয়েছে যা আত্মিক ও দৈহিক উভয় বিবেচনায়ই বড় রোগ। রূহানী ব্যাধি তো প্রকাশ্য; কেননা,

প্রথমতঃ এ থেকে স্বীয় পালনকর্তার না-শোকরি ও অবাধ্যতা সৃষ্টি হয়। যাকে কুফর বলা হয়, তা মানবাত্মার জন্য সর্বাপেক্ষা কঠিন ব্যাধি। মানবসভ্যতার জন্যও অত্যন্ত ঘৃণ্য দোষ।

দ্বিতীয়তঃ দুনিয়ার হীন উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য সত্যকে গোপন করা এবং স্বীয় অন্তরের কথাকে প্রকাশ করার হিম্মত না করা - এ ব্যাপারটিও অন্তরের বড় রোগ। মুনাফেকদের দৈহিক রোগ এজন্য যে, তারা সর্বদাই এ ভয়ের মধ্যে থাকে যে, না জানি কখন কোথায় তাদের প্রকৃত স্বরূপ প্রকাশ হয়ে পড়ে। দিনরাত এ চিন্তায় ব্যস্ত থাকাও একটা মানসিক ও রীরিক ব্যাধিই বটে। তাছাড়া এর পরিণাম অনিবার্যভাবেই ঝগড়া ও শক্ৰতা। কেননা, মুসলিমদের উন্নতি ও অগ্রগতি দেখে তারা সবসময়ই হিংসার আগুনে দ্বন্ধ হতে থাকে, কিন্তু সে হতভাগা নিজের অন্তরের কথাটুকুও প্রকাশ করতে পারে না। ফলে সে শারিরীক ও মানসিকভাবে অসুস্থ থাকে। “আল্লাহ্‌ তাদের রোগকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন”-এর অর্থ এই যে, তারা যেহেতু তাদের অন্তরকে ব্যাধি দিয়ে কলুষিত করেছে সেহেতু তাদের এ কলুষতা দিন দিন বাড়তেই থাকবে। এখানে মূলতঃ যা বুঝানো হয়েছে তা হলো, আল্লাহ্ তা'আলা কারও উপর যুলুম করেন না। কেউ খারাপ পথে চলতে না চাইলে তাকে সে পথে জোর করে চলতে বাধ্য করেন না এ কথা কুরআনের অন্যান্য আয়াতেও এসেছে। যেমন, সূরা আল-মায়েদার ৪৯, সূরা আল-আন’আমের ১১০, সূরা আত-তাওবাহর ১২৫, সূরা আস্-সফফ -এর ৫নং আয়াতে সুস্পষ্টভাবে বুঝানো হয়েছে যে, তাদের খারাপ কর্মকাণ্ডের কারণেই তাদের পরিণতি খারাপ হয়েছে। আর হিদায়াতও নসীব হয়নি।

[২] মুনাফিকদের এমন দু’টি চরিত্র ছিল যে, তারা নিজেরা মিথ্যা বলত, অপরকেও মিথ্যাবাদী বলত। [ইবনে কাসীর] এর দ্বারা বোঝা যায় যে, মিথ্যা বলার অভ্যাসই তাদের প্রকৃত অন্যায়। এ বদ-অভ্যাসই তাদেরকে কুফর ও নিফাক পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে। এ জন্যই অন্যায়ের পর্যায়ে যদিও কুফর ও নিফাকই সর্বাপেক্ষা বড়, কিন্তু এসবের ভিত্তি ও বুনিয়াদ হচ্ছে মিথ্যা। তাই আল্লাহ্‌ তা'আলা মিথ্যা বলাকে মূর্তিপূজার সাথে যুক্ত করে বলেছে, “মূর্তিপূজার অপবিত্রতা ও মিথ্যা বলা হতে বিরত থাক”। [সূরা আল-হাজ্জ;৩০]

হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “তোমরা মিথ্যা থেকে বেঁচে থাক। কেননা, মিথ্যা ঈমান দূর করে”। [মুসনাদে আহমাদ; ১/৫]

Tafsir Bayaan Foundation

তাদের অন্তরসমূহে রয়েছে ব্যাধি। সুতরাং আল্লাহ তাদের ব্যাধি বাড়িয়ে দিয়েছেন। আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব। কারণ তারা মিথ্যা বলত।

Muhiuddin Khan

তাদের অন্তঃকরণ ব্যধিগ্রস্ত আর আল্লাহ তাদের ব্যধি আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন। বস্তুতঃ তাদের জন্য নির্ধারিত রয়েছে ভয়াবহ আযাব, তাদের মিথ্যাচারের দরুন।

Zohurul Hoque

তাদের অন্তরে ব্যারাম, তাই আল্লাহ্ তাদের জন্য ব্যারাম বাড়িয়ে দিয়েছেন, আর তাদের জন্য ব্যথাদায়ক শাস্তি, যেহেতু তারা মিথ্যা বলে চলেছে।