কুরআন মজীদ সূরা বনী ইসরাঈল আয়াত ৭২
Qur'an Surah Al-Isra Verse 72
বনী ইসরাঈল [১৭]: ৭২ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ
وَمَنْ كَانَ فِيْ هٰذِهٖٓ اَعْمٰى فَهُوَ فِى الْاٰخِرَةِ اَعْمٰى وَاَضَلُّ سَبِيْلًا (الإسراء : ١٧)
- waman
- وَمَن
- And whoever
- এবং যে
- kāna
- كَانَ
- is
- হলো
- fī
- فِى
- in
- মধ্যে
- hādhihi
- هَٰذِهِۦٓ
- this (world)
- (এই) দুনিয়ার
- aʿmā
- أَعْمَىٰ
- blind
- অন্ধ
- fahuwa
- فَهُوَ
- then he
- তখন সে (হবে)
- fī
- فِى
- in
- মধ্যে
- l-ākhirati
- ٱلْءَاخِرَةِ
- the Hereafter
- আখিরাতের
- aʿmā
- أَعْمَىٰ
- (will be) blind
- অন্ধ
- wa-aḍallu
- وَأَضَلُّ
- and more astray
- বরং অধিকতর ভ্রষ্ট
- sabīlan
- سَبِيلًا
- (from the) path
- পথ হ'তে
Transliteration:
Wa man kaana fee haaziheee a'maa fahuwa fil aakhirati a'maa wa adallu sabeelaa(QS. al-ʾIsrāʾ:72)
English Sahih International:
And whoever is blind in this [life] will be blind in the Hereafter and more astray in way. (QS. Al-Isra, Ayah ৭২)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
যে ব্যক্তি এখানে (সত্য পথ দেখার ব্যাপারে) অন্ধ, সে আখেরাতেও হবে অন্ধ, আর সঠিক পথ থেকে অধিক বিচ্যুত। (বনী ইসরাঈল, আয়াত ৭২)
Tafsir Ahsanul Bayaan
যে লোক ইহলোকে অন্ধ, সে লোক পরলোকেও অন্ধ এবং অধিকতর পথভ্রষ্ট। [১]
[১] أَعْمَى (অন্ধ) বলতে অন্তরের অন্ধ। অর্থাৎ, যে দুনিয়াতে সত্য দেখা হতে, বুঝা হতে এবং কবুল করা হতে বঞ্চিত থাকে, সে আখেরাতে অন্ধ হবে এবং প্রতিপালকের বিশেষ অনুগ্রহ ও দয়া থেকে বঞ্চিত থাকবে।
Tafsir Abu Bakr Zakaria
আর যে ব্যক্তি এখন অন্ধ [১] সে আখিরাতেও অন্ধ [২] এবং সবচেয়ে বেশি পথভ্রষ্ট।
[১] এখানে অন্ধ বলে বাহ্যিক অন্ধদের বুঝানো হয়নি। বরং যাদের মন হক্ক বুঝার ক্ষেত্রে, আল্লাহর নিদর্শনাবলী দেখার ক্ষেত্রে অন্ধত্ব গ্রহণ করেছে। হক্ক মানতে চায়না এবং নিদর্শনাবলী দেখতে চায়না এমন প্রকৃত অন্ধদেরকে উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে। অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, “তারা কি দেশ ভ্ৰমণ করেনি? তাহলে তারা জ্ঞানবুদ্ধিসম্পন্ন হৃদয় ও শ্রুতিশক্তিসম্পন্ন শ্রবণের অধিকারী হতে পারত। বস্তুত চোখ তো অন্ধ নয়, রং অন্ধ হচ্ছে বুকের মধ্যে অবস্থিত হৃদয়। ” [সূরা আল-হাজ্বঃ ৪৬]
পক্ষান্তরে দুনিয়ার জীবনে যারা অন্ধ তারা যদি ঈমানদার হয় এবং সৎকাজ করে ও ধৈর্যধারণ করে তবে তাদের ব্যাপারে কুরআন ও হাদীসে প্রশংসা বাণী এসেছে। কুরআনে বলা হয়েছে, “তিনি ভ্ৰূকুঞ্চিত করলেন এবং মুখ ফিরিয়ে নিলেন। কারণ তার কাছে অন্ধ লোকটি আসল। আপনি কেমন করে জানবেন---সো হয়ত পরিশুদ্ধ হত, অথবা উপদেশ গ্ৰহণ করত, ফলে উপদেশ তার উপকারে আসত। ” [সূরা আবাসাঃ ১-৩]
অনুরূপভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীসেও ঐ সমস্ত লোকদের ব্যাপারে জান্নাতের সুসংবাদ জানানো হয়েছে যারা অন্ধ হয়ে যাবার পর ধৈর্যধারণ করেছে।
[২] এখানে বলা হয়েছে যে, তারা আখেরাতে অন্ধ হবে। আখেরাতে তাদের অন্ধত্বের ধরণ সম্পর্কে দু'টি মত রয়েছে।
এক, তারা বাস্তবিকই শারীরিকভাবে অন্ধ হিসেবে হাশরের মাঠে উঠবে। এ অর্থের সমর্থনে কুরআনের অন্যত্র এসেছে, “যে আমার স্মরণে বিমুখ থাকবে, অবশ্যই তার জীবন-যাপন হবে সংকুচিত এবং আমি তাকে কিয়ামতের দিন উত্থিত করব অন্ধ অবস্থায়। [ত্বাহা-হাঃ ১২৪] আরো এসেছে, “কিয়ামতের দিন আমি তাদেরকে সমবেত করব তাদের মুখে ভর দিয়ে চলা অবস্থায় অন্ধ, মূক ও বধির করে [সূরা আল-ইসরাঃ ৯৭]
দুই, এ ছাড়া আয়াতের আরেক অর্থ করা হয়ে থাকে যে, তারা কিয়ামতের দিন তাদের দুনিয়ার জীবনে যে সমস্ত দলীলপ্রমাণাদি ব্যবহার করে হক্ক পথ থেকে দূরে থাকে, সে সব থেকে তাদেরকে অন্ধ করে উঠানো হবে। মুজাহিদ রাহে মাহুল্লাহ এ অর্থ গ্রহণ করেছেন। [ইবন কাসীর]
Tafsir Bayaan Foundation
আর যে ব্যক্তি এখানে অন্ধ সে আখিরাতেও অন্ধ এবং অধিকতর পথভ্রষ্ট।
Muhiuddin Khan
যে ব্যক্তি ইহকালে অন্ধ ছিল সে পরকালেও অন্ধ এবং অধিকতর পথভ্রান্ত।
Zohurul Hoque
আর যে ইহলোকে অন্ধ সে তবে পরলোকেও হবে অন্ধ, এবং পথ থেকে অধিকতর পথভ্রষ্ট।