কুরআন মজীদ সূরা বনী ইসরাঈল আয়াত ৬২
Qur'an Surah Al-Isra Verse 62
বনী ইসরাঈল [১৭]: ৬২ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ
قَالَ اَرَاَيْتَكَ هٰذَا الَّذِيْ كَرَّمْتَ عَلَيَّ لَىِٕنْ اَخَّرْتَنِ اِلٰى يَوْمِ الْقِيٰمَةِ لَاَحْتَنِكَنَّ ذُرِّيَّتَهٗٓ اِلَّا قَلِيْلًا (الإسراء : ١٧)
- qāla
- قَالَ
- He said
- সে বললো
- ara-aytaka
- أَرَءَيْتَكَ
- "Do You see
- "কি আপনি মনে করেন
- hādhā
- هَٰذَا
- this
- এই
- alladhī
- ٱلَّذِى
- whom
- যাকে
- karramta
- كَرَّمْتَ
- You have honored
- আপনি মর্যাদা দিয়েছেন
- ʿalayya
- عَلَىَّ
- above me?
- আমার উপর
- la-in
- لَئِنْ
- If
- অবশ্যই যদি
- akhartani
- أَخَّرْتَنِ
- You give me respite
- আমাকে আপনি অবকাশ দেন
- ilā
- إِلَىٰ
- till
- পর্যন্ত
- yawmi
- يَوْمِ
- (the) Day
- দিন
- l-qiyāmati
- ٱلْقِيَٰمَةِ
- (of) the Resurrection
- ক্বিয়ামাতের
- la-aḥtanikanna
- لَأَحْتَنِكَنَّ
- I will surely destroy
- আমি অবশ্যই সমূলে নষ্ট করবো
- dhurriyyatahu
- ذُرِّيَّتَهُۥٓ
- his offspring
- তার বংশধরদের
- illā
- إِلَّا
- except
- ছাড়া
- qalīlan
- قَلِيلًا
- a few"
- স্বল্প সংখ্যক"
Transliteration:
Qaala ara'aytaka haazal lazee karramta 'alaiya la'in akhhartani ilaa Yawmil Qiyaamati la-ah tanikanna zurriyyatahooo illaa qaleelaa(QS. al-ʾIsrāʾ:62)
English Sahih International:
[Iblees] said, "Do You see this one whom You have honored above me? If You delay me [i.e., my death] until the Day of Resurrection, I will surely destroy his descendants, except for a few." (QS. Al-Isra, Ayah ৬২)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
সে বলল, ‘আপনি কি ব্যাপারটা খেয়াল করেছেন যে, আপনি এ ব্যক্তিকে আমার উপর সম্মান দিচ্ছেন! আপনি যদি আমাকে ক্বিয়ামাতের দিন পর্যন্ত সময় দেন, তাহলে আমি অল্প কিছু বাদে তার বংশধরদেরকে অবশ্য অবশ্যই আমার কর্তৃত্বাধীনে এনে ফেলব।’ (বনী ইসরাঈল, আয়াত ৬২)
Tafsir Ahsanul Bayaan
সে (আরো) বলল, ‘বল, এই যাকে তুমি আমার উপর মর্যাদা দান করলে, কিয়ামতের দিন পর্যন্ত যদি আমাকে অবকাশ দাও, তাহলে আমি অল্প কয়েকজন ছাড়া তার বংশধরকে অবশ্যই আয়ত্তে করে নেব।’ [১]
[১] অর্থাৎ, তাদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে নেব এবং যেভাবে চাইব তাদেরকে ভ্রষ্ট করব। অবশ্য কিছু লোক আমার ধোঁকা থেকে বেঁচে যাবে। (এর দ্বিতীয় অর্থঃ তাদেরকে সমূলে নষ্ট করে ফেলব।) আদম (আঃ) ও ইবলীসের এই ঘটনা ইতিপূর্বে সূরা বাকারাহ, আ'রাফ এবং সূরা হিজরে অতিবাহিত হয়েছে। এখানে চতুর্থবার সেটাকে উল্লেখ করা হচ্ছে। এ ছাড়াও সূরা কাহ্ফ, ত্বহা , এবং সূরা সা'দেও এর উল্লেখ হবে।
Tafsir Abu Bakr Zakaria
সে বলেছিল, ‘আমাকে জানান, এই যাকে আপনি আমার উপর মর্যাদা দান করলেন, কিয়ামতের দিন পর্যন্ত যদি আমাকে অবকাশ দেন, তাহলে শপথ করে বলছি আমি অল্প কয়েকজন ছাড়া তাঁর বংশধরকে অবশ্যই কতৃত্বাধীন করে ফেলব [১]
[১] যখন আল্লাহ্ তা'আলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে কাফেরদের শক্ৰতার অবস্থা বর্ণনা করলেন, তখন রাসূলকে এ সান্তনা দিতে চাইলেন যে, নবীদের সাথে এ বিরোধিতা অনেক থেকে চলে এসেছে। ইবলীস সেটা শুরু করেছিল। [ফাতহুল কাদীর] আদম আলাইহিস সালামকে সেজদা না করার সময় ইবলিস দু'টি কথা বলেছিল। এক, আদম মাটি দ্বারা সৃজিত হয়েছে এবং আমি অগ্নি দ্বারা সৃজিত। আপনি মাটিকে অগ্নির উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করলেন কেন? এ প্রশ্নটি আল্লাহর আদেশের বিপরীতে নির্দেশের রহস্য জানার সাথে সম্পর্কযুক্ত ছিল। কোন আদিষ্ট ব্যক্তির এরূপ প্রশ্ন করার অধিকার নেই। আল্লাহর পক্ষ থেকে আদিষ্ট ব্যক্তির যে রহস্য অনুসন্ধানের অধিকার নেই একথা বলা বাহুল্য। এর বাহ্যিক উত্তর এটাই যে, এক বস্তুকে অন্য বস্তুর উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করার অধিকার একমাত্র সে সত্তার, যিনি সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তা। তিনি যখন যে বস্তুকে অন্য বস্তুর উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করবেন, তখন তাই শ্রেষ্ঠ হয়ে যাবে। ইবলীসদের দ্বিতীয় কথা ছিল এই যে, যদি আমাকে কেয়ামত পর্যন্ত জীবন দান করা হয়, তবে আমি আদমের গোটা বংশধরকে (অবশ্য তাদের কয়েকজন ছাড়া) পথভ্রষ্ট করে ছাড়ব। আয়াতে আল্লাহ তা'আলা এর উত্তরে বলেছেনঃ আমার খাঁটি বান্দা যাঁরা, তাদের উপর তোমার কোন ক্ষমতা চলবে না; যদিও তোমার গোটা বাহিনী ও সর্বশক্তি এ কাজে নিয়োজিত হয়। অবশিষ্ট অখাঁটি বান্দারা তোমার বশীভূত হয়ে গেলে তাদেরও দূর্দশা তাই হবে, যা তোমার জন্য নির্ধারিত, অর্থাৎ জাহান্নামের আযাবে তোমাদের সবাই গ্রেফতার হবে। আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, শয়তানের অশ্বারোহী ও পদাতিক বাহিনী রয়েছে। এতে করে বাস্তবেও শয়তানের কিছু অশ্বারোহী ও কিছু পদাতিক বাহিনী থাকা অবাস্তব নয়। এবং তা অস্বীকার করার কোন কারণ নেই। ইবন আব্বাস রাদি'আল্লাহু আনহুমা বলেনঃ যারা কুফরের সমর্থনে যুদ্ধ করতে যায়, সেসব অশ্বারোহী ও পদাতিক বাহিনী শয়তানেরই অশ্বারোহী ও পদাতিক বাহিনী। আয়াতে উল্লেখিত শয়তানের আওয়াজ কি? এ সম্পর্কে ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেনঃ গান, বাদ্যযন্ত্র ও রং- তামাশার আওয়াজই শয়তানের আওয়াজ। এর মাধ্যমে সে মানুষকে সত্য থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এ থেকে জানা গেল যে, বাদ্যযন্ত্র ও গান-বাজনা হারাম। [বিস্তারিত দেখুন, ইবন কাসীর]
Tafsir Bayaan Foundation
সে বলল, ‘দেখুন, এ ব্যক্তি, যাকে আপনি আমার উপর সম্মান দিয়েছেন, যদি আপনি আমাকে কিয়ামত পর্যন্ত সময় দেন, তবে অতি সামান্য সংখ্যক ছাড়া তার বংশধরদেরকে অবশ্যই পথভ্রষ্ট করে ছাড়ব’।
Muhiuddin Khan
সে বললঃ দেখুন তো, এনা সে ব্যক্তি, যাকে আপনি আমার চাইতেও উচ্চ মার্যাদা দিয়ে দিয়েছেন। যদি আপনি আমাকে কেয়ামত দিবস পর্যন্ত সময় দেন, তবে আমি সামান্য সংখ্যক ছাড়া তার বংশধরদেরকে সমূলে নষ্ট করে দেব।
Zohurul Hoque
সে বললে -- ''দেখুন তো! এই বুঝি সে যাকে আপনি আমার উপরে মর্যাদা দিলেন? কিয়ামতের দিন পর্যন্ত যদি আমাকে আপনি অবকাশ দেন তবে আমি আলবৎ তার বংশধরদের সর্বনাশ করব অল্প কয়েকজন ছাড়া।’’