Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা বনী ইসরাঈল আয়াত ৩২

Qur'an Surah Al-Isra Verse 32

বনী ইসরাঈল [১৭]: ৩২ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

وَلَا تَقْرَبُوا الزِّنٰىٓ اِنَّهٗ كَانَ فَاحِشَةً ۗوَسَاۤءَ سَبِيْلًا (الإسراء : ١٧)

walā
وَلَا
And (do) not
এবং না
taqrabū
تَقْرَبُوا۟
go near
তোমরা নিকটে যেয়ো
l-zinā
ٱلزِّنَىٰٓۖ
adultery
জিনার
innahu
إِنَّهُۥ
Indeed it
নিশ্চয়ই তা
kāna
كَانَ
is
হলো
fāḥishatan
فَٰحِشَةً
an immorality
অশ্লীল কাজ
wasāa
وَسَآءَ
and (an) evil
ও নিকৃষ্ট
sabīlan
سَبِيلًا
way
পথ

Transliteration:

Wa laa taqrabuz zinaaa innahoo kaana faahishatanw wa saaa'a sabeelaa (QS. al-ʾIsrāʾ:32)

English Sahih International:

And do not approach unlawful sexual intercourse. Indeed, it is ever an immorality and is evil as a way. (QS. Al-Isra, Ayah ৩২)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

আর যিনা-ব্যভিচারের কাছেও যেও না, তা হচ্ছে অশ্লীল কাজ আর অতি জঘন্য পথ। (বনী ইসরাঈল, আয়াত ৩২)

Tafsir Ahsanul Bayaan

তোমরা ব্যভিচারের নিকটবর্তী হয়ো না, নিশ্চয় তা অশ্লীল ও নিকৃষ্ট আচরণ। [১]

[১] ইসলামে ব্যভিচার যেহেতু বড়ই অপরাধমূলক কাজ; এত বড় অপরাধ যে, কোন বিবাহিত পুরুষ অথবা মহিলার দ্বারা এ কাজ হয়ে গেলে, ইসলামী সমাজে তার জীবিত থাকার অধিকার থাকে না। আবার তাকে তরবারির এক আঘাতে হত্যা করাও যথেষ্ট হয় না, বরং নির্দেশ হল, পাথর মেরে মেরে তার জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটাতে হবে। যাতে সে সমাজে (অন্যদের জন্য) শিক্ষণীয় বিষয় হয়ে যায়। সেহেতু এখানে বলা হয়েছে, ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। অর্থাৎ, তাতে উদ্বুদ্ধকারী উপায়-উপকরণ থেকেও দূরে থাক। যেমন, 'গায়ের মাহরাম' (যার সাথে বিবাহ হারাম নয় এমন বেগানা) নারীকে দেখা-সাক্ষাৎ করা, তার সাথে অবাধ মেলামেশার ও কথা বলার পথ সুগম করা। অনুরূপ মহিলাদের সাজ-সজ্জা করে বেপর্দার সাথে বাড়ী থেকে বের হওয়া ইত্যাদি যাবতীয় কার্যকলাপ থেকে দূরে থাকা জরুরী। যাতে এই ধরনের অশ্লীলতা থেকে বাঁচা যায়।

Tafsir Abu Bakr Zakaria

আর যিনার ধারের-কাছেও যেও না, নিশ্চয় তা অশ্লীল ও নিকৃষ্ট আচরণ [১]।

[১] “যিনার কাছেও যেও না।” এ হুকুম ব্যক্তির জন্য এবং সামগ্রিক ভাবে সমগ্র সমাজের জন্যও। আয়াতে ব্যভিচার হারাম হওয়ার দুটি কারণ উল্লেখ করা হয়েছেঃ এক, এটি একটি অশ্লীল কাজ। মানুষের মধ্যে লজ্জা-শরম না থাকলে সে মনুষ্যত্ব থেকে বঞ্চিত হয়ে যায়। অতঃপর তার দৃষ্টিতে ভালমন্দের পার্থক্য লোপ পায়। কিন্তু যাদের মধ্যে মনুষ্যত্বের সামান্যতম অংশও বাকী আছে তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিলে তারা ব্যভিচারকে অন্যায় বলে স্বীকৃতি দিতে দ্বিধা করে না। আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, এক যুবক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে ব্যভিচার করার অনুমতি দিন। এটা শুনে চতুর্দিক থেকে লোকেরা তার দিকে তেড়ে এসে ধমক দিল এবং চুপ করতে বলল। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে কাছে ডেকে নিয়ে বললেন, বস। যুবকটি বসলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, তুমি কি এটা তোমার মায়ের জন্য পছন্দ কর? যুবক উত্তর করলঃ আল্লাহ আমাকে আপনার জন্য উৎসর্গ করুন, আল্লাহর শপথ, তা কখনো পছন্দ করিনা। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তেমনিভাবে মানুষও তাদের মায়েদের জন্য সেটা পছন্দ করেনা। তারপর রাসূল বললেন, তুমি কি তোমার মেয়ের জন্য তা পছন্দ কর? যুবক উত্তর করলঃ আল্লাহ আমাকে আপনার জন্য উৎসর্গ করুন, আল্লাহর শপথ, তা কখনো পছন্দ করিনা। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ

অনুরূপভাবে মানুষ তাদের মেয়েদের জন্য সেটা পছন্দ করেনা। তারপর রাসূল বললেন, তুমি কি তোমার বোনের জন্য সেটা পছন্দ কর? যুবক উত্তর করলঃ আল্লাহ আমাকে আপনার জন্য উৎসর্গ করুন, আল্লাহর শপথ, তা কখনো পছন্দ করিনা। তখন রাসূল বললেনঃ তদ্রুপ লোকেরাও তাদের বোনের জন্য তা পছন্দ করে না। (এভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার ফুফু, ও খালা সম্পর্কেও অনুরূপ কথা বললেন আর যুবকটি একই উত্তর দিল) এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উপর হাত রাখলেন এবং বললেন, “হে আল্লাহ! তার গুনাহ৷ ক্ষমা করে দিন, তার মনকে পবিত্র করুন এবং তার লজ্জাস্থানের হেফাযত করুন। ” বর্ণনাকারী সাহাবী বলেন, এরপর এ যুবককে কারো প্রতি তাকাতে দেখা যেত না। [মুসনাদে আহমাদঃ ৫/২৫৬, ২৫৭]

দ্বিতীয় কারণ সামাজিক অনাসৃষ্টি। ব্যভিচারের কারণে এটা এত প্রসার লাভ করে যে, এর কোন সীমা-পরিসীমা থাকে না। এর অশুভ পরিণাম অনেক সময় সমগ্ৰ গোত্র ও সম্প্রদায়কে বরবাদ করে দেয়। এ কারণেই ইসলাম এ অপরাধটিকে সব অপরাধের চাইতে গুরুতর বলে সাব্যস্ত করেছে। এবং এর শাস্তি ও সব অপরাধের শাস্তির চাইতে কঠোর বিধান করেছে। কেননা, এই একটি অপরাধ অন্যান্য শত শত অপরাধকে নিজের মধ্যে সন্নিবেশিত করেছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যিনাকার ব্যক্তি যিনা করার সময় মুমিন থাকে না। চোরের চুরি করার সময় মুমিন থাকে না। মদ্যপায়ী মদ্যপান করার সময় মুমিন থাকে না। [মুসলিমঃ ৫৭]

Tafsir Bayaan Foundation

আর তোমরা ব্যভিচারের কাছে যেয়ো না, নিশ্চয় তা অশ্লীল কাজ ও মন্দ পথ।

Muhiuddin Khan

আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ।

Zohurul Hoque

আর ব্যভিচারের ধারেকাছেও যেয়ো না, নিঃসন্দেহ তা একটি অশ্লীলতা, আর এটি এক পাপের পথ।