Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা বনী ইসরাঈল আয়াত ১০১

Qur'an Surah Al-Isra Verse 101

বনী ইসরাঈল [১৭]: ১০১ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

وَلَقَدْ اٰتَيْنَا مُوْسٰى تِسْعَ اٰيٰتٍۢ بَيِّنٰتٍ فَسْـَٔلْ بَنِيْٓ اِسْرَاۤءِيْلَ اِذْ جَاۤءَهُمْ فَقَالَ لَهٗ فِرْعَوْنُ اِنِّيْ لَاَظُنُّكَ يٰمُوْسٰى مَسْحُوْرًا (الإسراء : ١٧)

walaqad
وَلَقَدْ
And certainly
এবং নিশ্চয়ই
ātaynā
ءَاتَيْنَا
We had given
আমরা দিয়েছিলাম
mūsā
مُوسَىٰ
Musa
মূসাকে
tis'ʿa
تِسْعَ
nine
নয়টি
āyātin
ءَايَٰتٍۭ
Signs
নিদর্শন
bayyinātin
بَيِّنَٰتٍۖ
clear
সুস্পষ্ট
fasal
فَسْـَٔلْ
so ask
অতএব জিজ্ঞেস করো
banī
بَنِىٓ
(the) Children of Israel
বনী
is'rāīla
إِسْرَٰٓءِيلَ
(the) Children of Israel
ইসরাঈলকে
idh
إِذْ
when
যখন
jāahum
جَآءَهُمْ
he came to them
কাছে সে এসেছিলো তাদের
faqāla
فَقَالَ
then said
তখন বলেছিলো
lahu
لَهُۥ
to him
তাকে
fir'ʿawnu
فِرْعَوْنُ
Firaun
ফিরআউন
innī
إِنِّى
"Indeed, I
"নিশ্চয়ই আমি
la-aẓunnuka
لَأَظُنُّكَ
[I] think you
অবশ্যই আমি মনে করি তোমাকে
yāmūsā
يَٰمُوسَىٰ
O Musa!
হে মূসা
masḥūran
مَسْحُورًا
(you are) bewitched"
জাদুগ্রস্ত"

Transliteration:

Wa laqad aatainaa Moosaa tis'a Aayaatim baiyinaatin fas'al Baneee Israaa'eela iz jaaa'ahum faqaala lahoo Fir'awnu inee la azunnuka yaa Moosaa mas hooraa (QS. al-ʾIsrāʾ:101)

English Sahih International:

And We had certainly given Moses nine evident signs, so ask the Children of Israel [about] when he came to them and Pharaoh said to him, "Indeed I think, O Moses, that you are affected by magic." (QS. Al-Isra, Ayah ১০১)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

আমি মূসাকে নয়টি স্পষ্ট নিদর্শন দিয়েছিলাম। বানী ইসরাঈলকে জিজ্ঞেস করে দেখ, যখন সে তাদের (অর্থাৎ ফির‘আওন ও তার প্রধানদের) নিকট আসল তখন ফির‘আওন তাকে বলল, ‘ওহে মূসা! আমি তোমাকে অবশ্যই যাদুগ্রস্ত মনে করি।’ (বনী ইসরাঈল, আয়াত ১০১)

Tafsir Ahsanul Bayaan

অবশ্যই আমি মূসাকে ন’টি স্পষ্ট নিদর্শন দিয়েছিলাম;[১] সুতরাং তুমি বানী ইসরাঈলকে জিজ্ঞাসা করে দেখ। যখন সে তাদের নিকট এসেছিল, তখন ফিরআউন তাকে বলেছিল, ‘হে মূসা! আমি তো মনে করি, তুমি নিশ্চয়ই যাদুগ্রস্ত।’

[১] নয়টি মু'জিযা (অলৌকিক ঘটনা) হল; শুভ্র হাত, লাঠি, অনাবৃষ্টি, ফল-ফসলে কমি, তুফান, পঙ্গপাল, উকুন (ছারপোকা), ব্যাঙ এবং রক্ত। ইমাম হাসান বাসরী (রঃ) বলেন, অনাবৃষ্টি এবং ফল-ফসলে কমি একই জিনিস। আর নবম মু'জিযা ছিল লাঠির যাদুকরদের ভেল্কিকে গিলে ফেলা। এ ছাড়াও মূসা (আঃ)-কে আরো মু'জিযা দেওয়া হয়েছিল। যেমন, লাঠিকে পাথরে মারলে তা থেকে ১২টি ঝরনা প্রবাহিত হয়েছিল। মেঘের ছায়া করা এবং মান্ন্ ও সালওয়া ইত্যাদি। কিন্তু এখানে ৯টি নিদর্শন বলতে কেবল সেই ৯টি মু'জিযাকেই বুঝানো হয়েছে, যেগুলো ফিরআউন ও তার সম্প্রদায় দর্শন করেছিল। এই জন্য ইবনে আব্বাস (রাঃ) সমূদ্র বিদীর্ণ হয়ে পথ তৈরী হয়ে যাওয়াকেও সেই ৯টি মু'জিযার অন্তর্ভুক্ত গণ্য করেছেন এবং অনাবৃষ্টি ও ফল-ফসলে কমি এই উভয়কে একটি গণ্য করেছেন। তিরমিযীর একটি বর্ণনায় নয়টি নিদর্শনের ব্যাখ্যা এর বিপরীত করা হয়েছে। তবে সনদের দিক দিয়ে এ হাদীস দুর্বল। অতএব ন'টি স্পষ্ট নিদর্শন বলতে উল্লিখিত মু'জিযাগুলিই উদ্দেশ্য।

Tafsir Abu Bakr Zakaria

আর আমরা মূসাকে নয়টি স্পষ্ট নিদর্শন দিয়েছিলাম [১]; সুতরাং আপনি বনী ইসরাইলকে জিজ্ঞেস করে দেখুন; যখন তিনি তাদের কাছে এসেছিলেন, অতঃপর ফির’আউন তাঁকে বলেছিল, ‘হে মূসা! আমি মনে করি নিশ্চয় তুমি জাদুগ্রস্ত।’

বারতম রুকু’

[১] এখানে আবার মক্কার কাফেরদের মু'জিযা পেশ কবার দাবীর জবাব দেযা হয়েছে এবং এটি তৃতীয় জবাব। কাফেররা বলতো, আমরা তোমার প্রতি ঈমান আনবো না যতক্ষণ না তুমি অমুক অমুক কাজগুলো করে দেখাবে। জবাবে তাদেরকে বলা হচ্ছে, তোমাদের পূর্বে ফির’আউন মুসা আলাইহিস সালামের কাছে। এ ধরনের ‘আয়াত’ চেয়েছে। (পবিত্র কুরআনে “আয়াত” শব্দটি দু'টি অর্থে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এক, নিদর্শন দুই, কিতাবের আয়াত অর্থাৎ আহকামে এলাহীর অর্থে ব্যবহৃত হয়। এ স্থলে উভয় অর্থের সম্ভাবনা আছে। তবে অধিকাংশ তাফসীরবিদ এখানে “আয়াত” দ্বারা নিদর্শন বা মু'জেযা অর্থ নিয়েছেন। ) তখন মূসা আলাইহিসসালামকে আল্লাহ নয়টি প্রকাশ্য “আয়াত” দিয়েছিলেন। অর্থাৎ একটি দুটি নয় পরপর ৯টি সুস্পষ্ট মু'জিযা দেখানো হয়েছিল। তারপর এতসব মু'জিযা দেখার পরও যখন সে নবীকে অস্বীকার করলো তখন তার পরিণতি কি হলো তা তোমরা জানো। এখানে নয় সংখ্যা উল্লেখ করায় ‘আয়াতের সংখ্যা’ নয়ের বেশী না হওয়া জরুরী নয়। কিন্তু এখানে বিশেষ গুরুত্বের কারণে নয় উল্লেখ করা হয়েছে। সে নয়টি নিদর্শন নির্দিষ্টকরণে অনেক মতভেদ আছে, তবে তন্মধ্যে বিশেষভাবে পরিচিত হলো, (১) মুসা আলাইহিস সালাম এর লাঠি, যা অজগর সাপ হয়ে যেত, (২) শুভ্ৰ হাত, যা জামার নীচ থেকে বের করতেই চমকাতে থাকত, (৩) ফল-ফলাদির অভাব হওয়া। (৪) দুর্ভিক্ষ লাগা (৫) অস্বাভাবিকভাবে পঙ্গপালের আযাব প্রেরণ করা, (৬) তুফান প্রেরণ করা, (৭) শরীরের কাপড়ে এত উকুন সৃষ্টি করা, যা থেকে আত্মরক্ষার কোন উপায় ছিল না, (৮) ব্যাঙের আযাব চাপিয়ে দেয়া, ফলে প্রত্যেক পানাহারের বস্তুতে ব্যাঙ কিলবিল করতো এবং (৯) রক্তের আযাব প্রেরণ করা। ফলে প্রত্যেক পাত্রে ও পানাহারের বস্তুতে রক্ত দেখা যেত। [ইবন কাসীর]

Tafsir Bayaan Foundation

আর আমি মূসাকে নয়টি স্পষ্ট নিদর্শন দিয়েছিলাম, সুতরাং তুমি বনী ইসরাঈলকে জিজ্ঞাসা কর, যখন সে তাদের কাছে আসল তখন ফির‘আউন তাকে বলল, ‘হে মূসা, আমিতো ধারণা করি তুমি যাদুগ্রস্ত’।

Muhiuddin Khan

আপনি বণী-ইসরাঈলকে জিজ্ঞেস করুন, আমি মূসাকে নয়টি প্রকাশ্য নিদর্শন দান করেছি। যখন তিনি তাদের কাছে আগমন করেন, ফেরাউন তাকে বললঃ হে মূসা, আমার ধারনায় তুমি তো জাদুগ্রস্থ।

Zohurul Hoque

আর আমরা আলবৎ মূসাকে নয়টি স্পষ্ট নিদর্শন দিয়েছিলাম, সুতরাং ইসরাইলের বংশধরদের জিজ্ঞেস করে দেখ -- যখন তিনি তাদের কাছে এসেছিলেন, -- ফিরআউন তখন তাঁকে বলেছিল -- ''আমি অবশ্য তোমাকে, হে মূসা! মনে করি জাদুগ্রস্ত।’’