কুরআন মজীদ সূরা বনী ইসরাঈল আয়াত ১০০
Qur'an Surah Al-Isra Verse 100
বনী ইসরাঈল [১৭]: ১০০ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ
قُلْ لَّوْ اَنْتُمْ تَمْلِكُوْنَ خَزَاۤىِٕنَ رَحْمَةِ رَبِّيْٓ اِذًا لَّاَمْسَكْتُمْ خَشْيَةَ الْاِنْفَاقِۗ وَكَانَ الْاِنْسَانُ قَتُوْرًا ࣖ (الإسراء : ١٧)
- qul
- قُل
- Say
- বলো
- law
- لَّوْ
- "If
- "যদি
- antum
- أَنتُمْ
- you
- তোমরা
- tamlikūna
- تَمْلِكُونَ
- possess
- অধিকারী হ'তে
- khazāina
- خَزَآئِنَ
- the treasures
- ভান্ডারসমূহের
- raḥmati
- رَحْمَةِ
- (of) the Mercy
- অনুগ্রহের
- rabbī
- رَبِّىٓ
- (of) my Lord
- আমার রবের
- idhan
- إِذًا
- then
- তাহ'লে
- la-amsaktum
- لَّأَمْسَكْتُمْ
- surely you would withhold
- অবশ্যই তোমরা ধরে রাখতে
- khashyata
- خَشْيَةَ
- (out of) fear
- ভয়ে
- l-infāqi
- ٱلْإِنفَاقِۚ
- (of) spending"
- খরচ হওয়ার"
- wakāna
- وَكَانَ
- And is
- এবং হলো
- l-insānu
- ٱلْإِنسَٰنُ
- man
- মানুষ
- qatūran
- قَتُورًا
- stingy
- বড়ই কৃপণ
Transliteration:
Qul law antum tamlikoona khazaaa'ina rahmati Rabbeee izal la amsaktum khash yatal infaaq; wa kaanal insaanu qatooraa(QS. al-ʾIsrāʾ:100)
English Sahih International:
Say [to them], "If you possessed the depositories of the mercy of my Lord, then you would withhold out of fear of spending." And ever has man been stingy. (QS. Al-Isra, Ayah ১০০)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
বল, ‘তোমরা যদি আমার প্রতিপালকের রাহমাতের ভান্ডারের মালিক হয়ে যেতে, তবুও খরচ হয়ে যাবার ভয়ে তোমরা তা অবশ্যই ধরে রাখতে।’ বাস্তবিকই মানুষ বড়ই সংকীর্ণ-চিত্ত। (বনী ইসরাঈল, আয়াত ১০০)
Tafsir Ahsanul Bayaan
বল, ‘যদি তোমরা আমার প্রতিপালকের দয়ার ভান্ডারের অধিকারী হতে, তবুও তোমরা ব্যয় করে (নিঃস্ব) হয়ে যাবে এই আশংকায় তা ধরে রাখতে। আসলে মানুষ তো অতিশয় কৃপণ।’ [১]
[১] خَشْيَةَ الإِنْفَاقِ এর অর্থ, خَشْيَةَ أَنْ يُنْفِقُوْا فَيَفْتَقِرُوْا "এই ভয়ে যে, দান করলে ধন শেষ হয়ে যাবে এবং পরিশেষে নিঃস্ব হয়ে যাবে।" অথচ, এটা আল্লাহর ধন-ভান্ডার যা শেষ হওয়ার নয়। কিন্তু মানুষ সংকীর্ণ চিত্তের অধিকারী হওয়ায় কার্পণ্য করে। অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন, ﴿أَمْ لَهُمْ نَصِيبٌ مِنَ الْمُلْكِ فَإِذًا لا يُؤْتُونَ النَّاسَ نَقِيرًا﴾ অর্থাৎ, "এরা যদি আল্লাহর রাজত্বের কিছু অংশ পেয়ে যায়, তবে এরা মানুষদেরকে একটি তিল পরিমাণও কিছু দেবে না।" (সূরা নিসা ৪;৫৩ আয়াত) খেজুরের আঁটির পিঠে যে বিন্দু থাকে সেটাকে 'নাক্বীর' বলা হয়। অর্থাৎ, সামান্য পরিমাণও কিছুই দেবে না। এটা আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর দয়া যে, তিনি তাঁর ধন-ভান্ডারের মুখ মানুষের জন্য খুলে রেখেছেন। যেমন, হাদীসে আছে, "আল্লাহর হাত পরিপূর্ণ। তিনি রাত-দিন ব্যয় করেন, তবুও তা থেকে কিছুই কমে না। লক্ষ্য কর, যখন থেকে আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন, তখন থেকে তিনি কতই না ব্যয় করেই যাচ্ছেন, তা সত্ত্বেও তাঁর হাতে যা কিছু আছে তা থেকে কিছুই কমে যায়নি।"
(বুখারীঃ কিতাবুত্ তাওহীদ, মুসলিমঃ কিতাবুয্ যাকাত)
Tafsir Abu Bakr Zakaria
বলুন , ‘যদি তোমরা আমার রবের দয়ার ভাণ্ডারের অধিকারী হতে , তবুও ‘ব্যয় হয়ে যাবে’ এ আশংকায় তোমরা তা ধরে রাখতে; আর মানুষ তো খুবই কৃপণ [১]।
[১] আয়াতে বলা হয়েছে; যদি তোমরা আল্লাহর রহমতের ভান্ডারের মালিক হয়ে যাও, তবে তাতেও কৃপণতা করবে। কাউকে দেবে না। এ আশঙ্কায় যে, এভাবে দিতে থাকলে ভান্ডারই নিঃশেষ হয়ে যাবে। অবশ্য আল্লাহর রহমতের ভান্ডার কখনও নিঃশেষ হয় না। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহর হাত পরিপূর্ণ, খরচে তা কমেনা, দিন রাতে প্রচুর প্রদানকারী, তোমরা কি দেখ না যে, আসমান ও যমীনের সৃষ্টির সময় থেকে এ পর্যন্ত যা কিছু তিনি খরচ করেছেন তাতে তার ডান হাতের মধ্যস্থিত কিছুই কমেনি। ” [বুখারীঃ ৭৪১৯, মুসলিমঃ ৯৯৩] কিন্তু মানুষ স্বভাবগতভাবে ছোটমানা ও কম সাহসী। [দেখুন, সূরা আল-মা'আরিজঃ ১৯-২২] অকাতরে দান করার সাহস তার নেই।
Tafsir Bayaan Foundation
বল, ‘যদি তোমরা আমার রবের রহমতের ভান্ডারসমূহের মালিক হতে, তবুও খরচ হয়ে যাওয়ার ভয়ে তোমরা তা আটকে রাখতে; আর মানুষ তো অতি কৃপণ’।
Muhiuddin Khan
বলুনঃ যদি আমার পালনকর্তার রহমতের ভান্ডার তোমাদের হাতে থাকত, তবে ব্যয়িত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় অবশ্যই তা ধরে রাখতে। মানুষ তো অতিশয় কৃপণ।
Zohurul Hoque
বলো -- ''যদি তোমরা আমার প্রভুর করুণা-ভান্ডারের উপরে কর্তৃত্ব করতে তাহলে তোমরা নিশ্চয়ই তা ধরে রাখতে খরচ করার ভয়ে।’’ আর মানুষ বড় কৃপণ।