কুরআন মজীদ সূরা নাহল আয়াত ১২৬
Qur'an Surah An-Nahl Verse 126
নাহল [১৬]: ১২৬ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ
وَاِنْ عَاقَبْتُمْ فَعَاقِبُوْا بِمِثْلِ مَا عُوْقِبْتُمْ بِهٖۗ وَلَىِٕنْ صَبَرْتُمْ لَهُوَ خَيْرٌ لِّلصّٰبِرِيْنَ (النحل : ١٦)
- wa-in
- وَإِنْ
- And if
- এবং যদি
- ʿāqabtum
- عَاقَبْتُمْ
- you retaliate
- তোমরা প্রতিশোধ নাও
- faʿāqibū
- فَعَاقِبُوا۟
- then retaliate
- তবে তোমরা প্রতিশোধ নিবে
- bimith'li
- بِمِثْلِ
- with the like
- সমান
- mā
- مَا
- of what
- (তার) যা
- ʿūqib'tum
- عُوقِبْتُم
- you were afflicted
- কষ্ট দেয়া হয়েছে তোমাদের
- bihi
- بِهِۦۖ
- with [it]
- তার সাথে
- wala-in
- وَلَئِن
- But if
- কিন্তু অবশ্যই যদি
- ṣabartum
- صَبَرْتُمْ
- you are patient
- তোমরা ধৈর্য ধরো
- lahuwa
- لَهُوَ
- surely (it) is
- অবশ্যই তা
- khayrun
- خَيْرٌ
- better
- উত্তম
- lilṣṣābirīna
- لِّلصَّٰبِرِينَ
- for those who are patient
- জন্যে ধৈর্যশীলদের
Transliteration:
Wa in 'aaqabtum fa'aaqiboo bimisli maa 'ooqibtum bihee wa la'in sabartum lahuwa khairul lissaabireen(QS. an-Naḥl:126)
English Sahih International:
And if you punish [an enemy, O believers], punish with an equivalent of that with which you were harmed. But if you are patient – it is better for those who are patient. (QS. An-Nahl, Ayah ১২৬)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
যদি তোমরা প্রতিশোধ গ্রহণ করতে চাও তবে ততটুকু প্রতিশোধ গ্রহণ কর যতটুকু অন্যায় তোমাদের উপর করা হয়েছে। আর যদি তোমরা ধৈর্য ধারণ কর তবে ধৈর্যধারণকারীদের জন্য অবশ্যই তা উত্তম। (নাহল, আয়াত ১২৬)
Tafsir Ahsanul Bayaan
যদি তোমরা প্রতিশোধ গ্রহণ কর, তাহলে ঠিক ততখানি করবে যতখানি অন্যায় তোমাদের প্রতি করা হয়েছে। আর যদি তোমরা ধৈর্যধারণ কর, তাহলে অবশ্যই ধৈর্যশীলদের জন্য সেটাই উত্তম। [১]
[১] এর মধ্যে যদিও সীমা অতিক্রম না করে সমান সমান প্রতিশোধ নেওয়ার অনুমতি রয়েছে। সীমা অতিক্রম করলে সেও যালেম বলে গণ্য হবে। তবে ক্ষমা করে দেওয়া ও ধৈর্য ধারণ করা অতি উত্তম।
Tafsir Abu Bakr Zakaria
আর যদি তোমরা শাস্তি দাও [১], তবে ঠিক ততখানি শাস্তি দেবে যতখানি অন্যায় তোমাদের প্রতি করা হয়েছে। তবে তোমরা ধৈর্য ধারণ করল ধৈর্যশীলদের জন্য সেটা অবশ্যই উত্তম [২]।
[১] (وَاِنْ عَاقَبْتُمْ) বাক্যে প্রথমতঃ আল্লাহর পথে দাওয়াত দানকারীদেরকে আইনগত অধিকার দেয়া হয়েছে যে, যারা নির্যাতন চালায়, তাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করা আপনার জন্য বৈধ, কিন্তু এই শর্তে যে, প্রতিশোধ গ্রহণের ক্ষেত্রে নির্যাতনের সীমা অতিক্রম করা যাবে না। যতটুকু যুলুম প্রতিপক্ষের তরফ থেকে করা হয়, প্রতিশোধ ততটুকুই গ্রহণ করতে হবে; বেশী হতে পারবে না। আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, "এক ইয়াহুদী এক মেয়েকে দুই পাথরের মাঝে রেখে হত্যা করে, মৃত্যুর পূর্বে তাকে বিভিন্ন জনের জিজ্ঞাসা করা হলে সে এক ইয়াহুদীর প্রতি ইঙ্গিত করে। সে ইয়াহুদীকে নিয়ে আসা হলে সে তা স্বীকার করে। ফলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সে ইয়াহুদীকে দুই পাথরের মাঝখানে বেঁধে হত্যা করার আদেশ করেন। [বুখারীঃ ৬৮৮৪, মুসলিমঃ ১৬৭২]
[২] আয়াতের শেষে পরামর্শ দেয়া হয়েছে যে, যদিও প্রতিশোধ গ্রহণের অধিকার রয়েছে, কিন্তু সবর করা উত্তম। ওহুদ যুদ্ধে সত্তর জন সাহাবীর শাহাদাত বরণ এবং হামযা রাদিয়াল্লাহু আনহু-কে হত্যার পর তার লাশের নাক-কান কর্তনের ঘটনা দেখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দারুণভাবে মর্মাহত হলেন। সাহাবায়ে কেরাম (আনসারগণ) বললেনঃ আমরা যদি তাদের উপর জয়লাভ করি, তবে তাদেরকে দেখিয়ে দেব তারপর যখন মক্কা বিজয়ের দিন আসল, তখন আল্লাহ নাযিল করলেন- “যদি শাস্তি দিতে চাও তবে ততটুকুই দেবে, যতটুকু তোমরা শাস্তি ভোগ করেছ। আর যদি তোমরা ধৈর্য ধারণ কর, তবে তা ধৈর্যশীলদের জন্য অনেক উত্তম (কল্যাণকর)।” তখন এক লোক বললঃ আজকের পরে কুরাইশদের কেউ অবশিষ্ট থাকবে না। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ চারজন ব্যতীত আর সবাইকে ছেড়ে দাও। [মুস্তাদরাকে হাকীমঃ ২/৩৫৮-৩৫৯, তিরমিযিঃ ৩১২৯, নাসায়ীঃ ২৯৯]
এ আয়াত নাযিল হওয়ার পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সবর করেছিলেন। সম্ভবতঃ এ কারণেই কোন কোন রেওয়ায়েতে বলা হয়েছে যে, আলোচ্য আয়াতগুলো মক্কা বিজয়ের সময় নাযিল হয়েছিল। এটাও সম্ভব যে, আয়াতগুলো বার বার নাযিল হয়েছিল। প্রথমে ওহুদ যুদ্ধের ব্যাপারে নাযিল হয়েছে এবং পরে মক্কা বিজয়ের সময় পুনর্বার নাযিল হয়েছে।
Tafsir Bayaan Foundation
আর যদি তোমরা শাস্তি দাও, তবে ঠিক ততটুকু শাস্তি দাও যতটুকু তোমাদের দেয়া হয়েছে। আর যদি তোমরা সবর কর, তবে তাই সবরকারীদের জন্য উত্তম।
Muhiuddin Khan
আর যদি তোমরা প্রতিশোধ গ্রহণ কর, তবে ঐ পরিমাণ প্রতিশোধ গ্রহণ করবে, যে পরিমাণ তোমাদেরকে কষ্ট দেয়া হয়। যদি সবর কর, তবে তা সবরকারীদের জন্যে উত্তম।
Zohurul Hoque
আর যদি তোমরা আঘাত দাও তবে আঘাত দিয়ো যেমন তোমাদের আঘাত দেওয়া হয়েছিল তেমনিভাবে। আর যদি তোমরা অধ্যাবসায় অবলন্বন কর সেটি তাহলে অধ্যবসায়ীদের জন্য আরো ভাল।