Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা ইব্রাহীম আয়াত ৩১

Qur'an Surah Ibrahim Verse 31

ইব্রাহীম [১৪]: ৩১ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

قُلْ لِّعِبَادِيَ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا يُقِيْمُوا الصَّلٰوةَ وَيُنْفِقُوْا مِمَّا رَزَقْنٰهُمْ سِرًّا وَّعَلَانِيَةً مِّنْ قَبْلِ اَنْ يَّأْتِيَ يَوْمٌ لَّا بَيْعٌ فِيْهِ وَلَا خِلٰلٌ (ابراهيم : ١٤)

qul
قُل
Say
বলো (হে নাবী)
liʿibādiya
لِّعِبَادِىَ
to My slaves
আমার দাসদেরকে
alladhīna
ٱلَّذِينَ
those who
যারা
āmanū
ءَامَنُوا۟
believe
ঈমান এনেছে
yuqīmū
يُقِيمُوا۟
(to) establish
তারা যেন প্রতিষ্ঠা করে
l-ṣalata
ٱلصَّلَوٰةَ
the prayers
সালাত
wayunfiqū
وَيُنفِقُوا۟
and (to) spend
ও তারা ব্যয় করে
mimmā
مِمَّا
from what
তা হ'তে যা
razaqnāhum
رَزَقْنَٰهُمْ
We have provided them
আমরা জীবিকা দিয়েছি তাদের
sirran
سِرًّا
secretly
গোপনে
waʿalāniyatan
وَعَلَانِيَةً
and publicly
ও প্রকাশ্যে
min
مِّن
before
থেকেই
qabli
قَبْلِ
before
পূর্ব
an
أَن
[that]
যে
yatiya
يَأْتِىَ
comes
আসবে
yawmun
يَوْمٌ
a Day
সেদিন
لَّا
not
না
bayʿun
بَيْعٌ
any trade
কেনা-বেচা হবে
fīhi
فِيهِ
in it
তার মধ্যে
walā
وَلَا
and not
আর না
khilālun
خِلَٰلٌ
any friendship
বন্ধুত্ব (কাজে আসবে)

Transliteration:

Qul li'ibaadiyal lazeena aamanoo yuqeemus Salaata wa yunfiqoo mimmaa razaqnaahum sirranw wa 'alaaniyatam min qabli any yaatiya Yawmul laa bai'un feehi wa laa khilaal (QS. ʾIbrāhīm:31)

English Sahih International:

[O Muhammad], tell My servants who have believed to establish prayer and spend from what We have provided them, secretly and publicly, before a Day comes in which there will be no exchange [i.e., ransom], nor any friendships. (QS. Ibrahim, Ayah ৩১)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

আমার বান্দাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে বল নামায প্রতিষ্ঠা করতে আর যে জীবিকা আমি তাদেরকে দিয়েছি তাত্থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করতে- সেদিন আসার পূর্বে যেদিন না চলবে কোন কেনা-বেচা আর না কোন বন্ধুত্ব। (ইব্রাহীম, আয়াত ৩১)

Tafsir Ahsanul Bayaan

আমার বান্দাদের মধ্যে যারা বিশ্বাসী তাদেরকে বল, ‘তারা যেন নামায কায়েম করে এবং আমি তাদেরকে যা দান করেছি তা হতে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে; সেদিন আসার পূর্বে যেদিন কোন ক্রয়-বিক্রয় থাকবে না এবং থাকবে না কোন বন্ধুত্ব।’[১]

[১] নামায কায়েম বা প্রতিষ্ঠা করার অর্থ এই যে, তা নবী (সাঃ)-এর তরীকা মোতাবেক যথাসময়ে, মনোযোগ সহকারে এবং বিনয়-নম্রতা বজায় রেখে সম্পন্ন করা। ব্যয় করার অর্থ যাকাত আদায় করা, তার মাধ্যমে আত্মীয়তার বন্ধন বজায় রাখা এবং অন্যান্য অভাবীদের প্রতি অনুগ্রহ প্রদর্শন করা। শুধু এই নয় যে, মুসলিম নিজের স্বার্থে ও নিজস্ব প্রয়োজনে অকুণ্ঠভাবে বহু অর্থ ব্যয় করবে; কিন্তু আল্লাহর নির্দেশিত স্থানে ব্যয় করতে কুণ্ঠাবোধ করবে। কিয়ামতের দিন এমন হবে যেখানে না ক্রয়-বিক্রয় সম্ভব হবে, আর না কোন বন্ধুত্ব কারো কাজে আসবে।

Tafsir Abu Bakr Zakaria

আমার বান্দাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে আপনি বলুন, ‘সালাত কায়েম করতে এবং আমি তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করতে [১]---সে দিনের আগে যে দিন থাকবে না কোন বেচা- কেনা এবং থাকবে না বন্ধুত্বও [২]।’

[১] এ আয়াতে মু’মিন বান্দাদের জন্য বিরাট সুসংবাদ ও সম্মান রয়েছে। প্রথমে আল্লাহ্ তা’আলা তাদেরকে নিজের বান্দা বলেছেন, এরপর ঈমান-গুণে গুণান্বিত করেছেন, অতঃপর তাদেরকে চিরস্থায়ী সুখ ও সম্মান দানের পদ্ধতি বলে দিয়েছেন যে, তারা সালাত কায়েম করুক। এর মানে হচ্ছে, মু’মিনদের হতে হবে কৃতজ্ঞ। আর এ কৃতজ্ঞতার বাস্তব রূপ ফুটিয়ে তোলার জন্য এদের সালাত কায়েম এবং আল্লাহ্‌র পথে অর্থ ব্যয় করতে হবে। সালাতের সময় অলসতা এবং সালাতের সুষ্ঠু নিয়মাবলীতে ক্রটি না করা চাই। এছাড়া আল্লাহ্ প্রদত্ত রিযক থেকে কিছু তাঁর পথেও ব্যয় করুক। ব্যয় করার উভয় পদ্ধতিকেই বৈধ রাখা হয়েছে- গোপনে অথবা প্রকাশ্যে। কোন কোন আলেম বলেনঃ ফরয যাকাত, ফিৎরা ইত্যাদি প্রকাশ্যে হওয়া উচিত- যাতে অন্যরাও উৎসাহিত হয়, আর নফল দান-সদকা গোপনে করা উচিত যাতে রিয়া ও নাম-যশ অর্জনের মত মনোভঙ্গি সৃষ্টির আশংকা না থাকে। [কুরতুবী] ব্যাপারটি আসলে নিয়তের উপর নির্ভরশীল। যদি প্রকাশ্যে দান করার মধ্যে রিয়া ও নাম-যশের নিয়ত থাকে, তবে দানের ফযীলত শেষ হয়ে যায়- তা ফরয হোক কিংবা নফল। পক্ষান্তরে যদি অপরকে উৎসাহিত করার নিয়ত থাকে, তবে ফরয ও নফল উভয় ক্ষেত্রে প্রকাশ্যে দান করা বৈধ। [দেখুন, তাফসীর ইবন কাসীর ১/৭০১; সূরা আল-বাকারার ২৭১ নং আয়াতের তাফসীর]

[২] তারপর আল্লাহ্ তা’আলা সালাত কায়েম করতে এবং গোপনে ও প্রকাশ্যে দান করাকে দ্রুত করতে বলেছে। [ইবন কাসীর] কারণ, কখন কিয়ামত এসে যায় তখন আর তারা এগুলো করতে সক্ষম হবে না। কারণ সেদিন কোন লেন-দেনের মাধ্যমে নিজের আযাবকে অন্যের কাছে স্থানান্তর করতে পারবে না। অনুরূপভাবে সেদিন কোন বন্ধুও তার জন্য কিছু দিতে পারবে না। [সা’দী] অন্য আয়াতে আল্লাহ্ তা’আলা তা আরো স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেনঃ

“হে মু’মিনগণ! আমি যা তোমাদেরকে দিয়েছি তা থেকে তোমরা ব্যয় কর সেদিন আসার আগে, যেদিন কেনা-বেচা, বন্ধুত্ব ও সুপারিশ থাকবে না এবং কাফিররাই যালিম।” [সূরা আল-বাকারাহঃ ২৫৪]

Tafsir Bayaan Foundation

আমার বান্দাদের বল, ‘যারা ঈমান এনেছে, তারা যেন সালাত কায়েম করে এবং আমি তাদেরকে যে রিয্ক দিয়েছি তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, ঐ দিন আসার পূর্বে যে দিন কোন বেচা-কেনা থাকবে না এবং থাকবে না বন্ধুত্বও।

Muhiuddin Khan

আমার বান্দাদেরকে বলে দিন যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে, তারা নামায কায়েম রাখুক এবং আমার দেয়া রিযিক থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করুক ঐদিন আসার আগে, যেদিন কোন বেচা কেনা নেই এবং বন্ধুত্বও নেই।

Zohurul Hoque

আমার বান্দাদের যারা বিশ্বাস করে তাদের বলো -- তারা নামায কায়েম করুক, এবং আমরা তাদের যে জীবনোপক রণ দিয়েছি তা থেকে তারা খরচ করুক, গোপনে ও প্রকাশ্যভাবে, সেইদিন আসবার আগে যাতে চলবে না কোনো লেনদেন, না কোনো বন্ধু- সম্পর্ক।