Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা রা'দ আয়াত ৩৭

Qur'an Surah Ar-Ra'd Verse 37

রা'দ [১৩]: ৩৭ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

وَكَذٰلِكَ اَنْزَلْنٰهُ حُكْمًا عَرَبِيًّاۗ وَلَىِٕنِ اتَّبَعْتَ اَهْوَاۤءَهُمْ بَعْدَمَا جَاۤءَكَ مِنَ الْعِلْمِۙ مَا لَكَ مِنَ اللّٰهِ مِنْ وَّلِيٍّ وَّلَا وَاقٍ ࣖ (الرعد : ١٣)

wakadhālika
وَكَذَٰلِكَ
And thus
এবং এভাবে
anzalnāhu
أَنزَلْنَٰهُ
We have revealed it
তা আমরা অবতীর্ণ করেছি
ḥuk'man
حُكْمًا
(to be) a judgment of authority
বিধানরূপে
ʿarabiyyan
عَرَبِيًّاۚ
(in) Arabic
আরবী ভাষায়
wala-ini
وَلَئِنِ
And if
এবং অবশ্যই যদি
ittabaʿta
ٱتَّبَعْتَ
you follow
তুমি অনুসরণ করো
ahwāahum
أَهْوَآءَهُم
their desires
তাদের খেয়ালখুশীর
baʿdamā
بَعْدَمَا
after what
পরেও যা
jāaka
جَآءَكَ
came to you
তোমার কাছে এসেছে
mina
مِنَ
of
থেকে
l-ʿil'mi
ٱلْعِلْمِ
the knowledge
জ্ঞান
مَا
not
নেই
laka
لَكَ
for you
তোমার জন্যে
mina
مِنَ
against
বিরুদ্ধে
l-lahi
ٱللَّهِ
Allah
আল্লাহর
min
مِن
any
কোনো
waliyyin
وَلِىٍّ
protector
অভিভাবক (বাঁচাতে)
walā
وَلَا
and not
এবং না
wāqin
وَاقٍ
defender
কোনো রক্ষাকারী

Transliteration:

Wa kazaalika anzalnaahu hukman 'Arabiyyaa; wa la'init taba'ta ahwaaa 'ahum ba'da maa jaaa'aka minal 'ilmi maa laka minal laahi minw waliyinw wa laa waaq (QS. ar-Raʿd:37)

English Sahih International:

And thus We have revealed it as an Arabic legislation. And if you should follow their inclinations after what has come to you of knowledge, you would not have against Allah any ally or any protector. (QS. Ar-Ra'd, Ayah ৩৭)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

এভাবে আমি একে বিধানরূপে নাযিল করেছি আরবী ভাষায়। তোমার কাছে জ্ঞান আসার পরেও তুমি যদি তাদের খাহেশের অনুসরণ কর, তবে আল্লাহর মোকাবালায় তোমার কোন অভিভাবক থাকবে না, থাকবে না কোন রক্ষাকারী। (রা'দ, আয়াত ৩৭)

Tafsir Ahsanul Bayaan

আর এভাবে আমি এ (কুরআন) অবতীর্ণ করেছি আরবী ভাষায় জীবন-বিধান স্বরূপ;[১] জ্ঞান প্রাপ্তির[২] পর তুমি যদি তাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ কর,[৩] তাহলে আল্লাহর বিরুদ্ধে তোমার কোন অভিভাবক ও রক্ষাকর্তা থাকবে না।[৪]

[১] অর্থাৎ, যেমন তোমার পূর্ববর্তী রসূলদের প্রতি স্থানীয় ভাষায় গ্রন্থ অবতীর্ণ করেছিলাম, তেমনই তোমার উপর কুরআন আরবী ভাষায় অবতীর্ণ করলাম। কেননা তোমার প্রথম সম্বোধিত লোকেরা আরব, যারা কেবল আরবী ভাষাই জানে। যদি এই কুরআন অন্য কোন ভাষায় অবতীর্ণ করা হত, তাহলে তারা বুঝতে সক্ষম হতো না, ফলে হিদায়াত গ্রহণ করার ব্যাপারে তাদের জন্য ওজর রয়ে যেত। সুতরাং আমি আরবী ভাষায় কুরআন অবতীর্ণ করে তাদের এই ওজর খন্ডন করে দিলাম।

[২] এর অর্থ সেই জ্ঞান যা অহীর মাধ্যমে নবী (সাঃ)-কে প্রদান করা হয়েছে, যাতে ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টানদের আকীদা-বিশ্বাসের বাস্তব রূপও তাঁর কাছে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।

[৩] এ থেকে ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টানদের কতিপয় খেয়াল-খুশী ও আকাঙ্ক্ষাকে বুঝানো হয়েছে, যার সম্বন্ধে তারা চেয়েছিল যে, শেষ নবী যেন তা পূরণ করেন, যেমন; বাইতুল মাকদিসকে সর্বদা কিবলা করে রাখা এবং তাদের আকীদা-বিশ্বাসের বিরোধিতা না করা প্রভৃতি।

[৪] এটা বাস্তবে উম্মতের উলামাদের জন্য সতর্কবাণী যে, তারা যেন পার্থিব ক্ষণস্থায়ী সুখ-স্বার্থ লাভের জন্য কুরআন ও হাদীসের মোকাবিলায় লোকেদের ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষার অনুসরণ না করে। যদি তারা এমনটি করে, তাহলে তাদেরকে আল্লাহর শাস্তি থেকে কেউ রক্ষা করতে পারবে না।

Tafsir Abu Bakr Zakaria

আর এভাবেই [১] আমরা কুরআনকে নাযিল করেছি আরবী ভাষায় বিধানরূপে। আর জ্ঞান পাওয়ার পরও যদি আপনি তাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করেন তবে আল্লাহ্‌র বিরুদ্ধে [২] আপনার কোন অভিভাবক ও রক্ষক থাকবে না [৩]।

[১] অর্থাৎ যেভাবে আপনার পূর্বে আমরা অনেক নবী-রাসূল পাঠিয়েছি এবং আপনার পূর্বে যখনই প্রয়োজন মনে করেছি তখনই কিতাব পাঠিয়েছি সেভাবে আমরা আপনাকে রাসূল হিসেবে পাঠিয়েছি এবং আমরা আপনাকে কুরআন নামক গ্রন্থখানি দিয়েছি, তাকে আরবী ভাষায় নাযিল করেছি। [ইবন কাসীর; মুয়াসসার]

এ কিতাব আপনার উপর নাযিল করে আমি আপনাকে সম্মানিত করেছি এবং অন্যদের উপর আপনার শ্ৰেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠিত করেছি। কারণ, এ কুরআনের বৈশিষ্ট্য অন্যগুলোর চেয়ে আলাদা। এটি এমন যে, “বাতিল এতে অনুপ্রবেশ করতে পারে না-সামনে থেকেও না, পিছন থেকেও না। এটা প্রজ্ঞাময়, স্বপ্রশংসিতের কাছ থেকে নাযিলকৃত।” [সূরা ফুসসিলাতঃ ৪২] [ইবন কাসীর]

অথবা আয়াতের অর্থ যেভাবে প্রত্যেক নবী ও রাসূলকে তাদের নিজস্ব ভাষায় কিতাব দিয়েছি তেমনি আপনাকে আরবী ভাষায় এ কুরআন প্রদান করলাম। [কুরতুবী]

[২] অর্থাৎ আল্লাহ্‌র শাস্তি ও পাকড়াও এর বিপরীতে আপনার কোন সাহায্যকারী থাকবে না। [মুয়াসসার]

[৩] তাদের খেয়ালখুশীর কোন শেষ নেই। তবে বিশেষ করে আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারও ইবাদত করা। [কুরতুবী] রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অবশ্যই কারও খেয়াল-খুশী ও কোন মনগড়া মতের অনুসারী হতে পারেন না। এখানে রাসূলের উম্মতদেরকে সাবধান করা হচ্ছে। বিশেষ করে এ উম্মতের আলেম সম্প্রদায়কেই এখানে বেশী উদ্দেশ্য করা হয়েছে। তারা যেন আল্লাহ্‌র নির্দেশ, কুরআন ও সুন্নাহ বোঝার পর অন্য কোন কারণে সেটা বাস্তবায়ন করতে পিছপা না হয়। অন্য কোন মত ও পথের অনুসারী না হয়। অন্যথা তাদের পরিণাম হবে অত্যন্ত ভয়াবহ। দুনিয়া ও আখেরাতে তাদের কোন সাহায্যকারী, উদ্ধারকারী ও অভিভাবক থাকবে না। [দেখুন, ইবন কাসীর]

Tafsir Bayaan Foundation

আর এভাবেই আমি কুরআনকে বিধানস্বরূপ আরবীতে নাযিল করেছি। তোমার নিকট জ্ঞান পৌঁছার পরও যদি তুমি তাদের খেয়াল খুশির অনুসরণ কর, তবে আল্লাহ ছাড়া তোমার কোন অভিভাবক ও রক্ষাকারী নেই।

Muhiuddin Khan

এমনিভাবেই আমি এ কোরআনকে আরবী ভাষায় নির্দেশরূপে অবতীর্ণ করেছি। যদি আপনি তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করেন আপনার কাছে জ্ঞান পৌঁছার পর, তবে আল্লাহর কবল থেকে আপনার না কোন সাহায্যকারী আছে এবং না কোন রক্ষাকারী।

Zohurul Hoque

আর এইভাবে আমরা এটি অবতারণ করেছি -- একটি হুকুম আরবীতে। আর তুমি যদি তাদের খেয়ালখুশির অনুসরণ করো তোমার কাছে জ্ঞানের যা এসেছে তার পরে তবে আল্লাহ্‌র বিরুদ্ধে তুমি পাবে না কোনো বন্ধুবান্ধব, আর না কোনো রক্ষক।