কুরআন মজীদ সূরা ইউসূফ আয়াত ১০৬
Qur'an Surah Yusuf Verse 106
ইউসূফ [১২]: ১০৬ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ
وَمَا يُؤْمِنُ اَكْثَرُهُمْ بِاللّٰهِ اِلَّا وَهُمْ مُّشْرِكُوْنَ (يوسف : ١٢)
- wamā
- وَمَا
- And not
- এবং না
- yu'minu
- يُؤْمِنُ
- believe
- বিশ্বাস করে
- aktharuhum
- أَكْثَرُهُم
- most of them
- তাদের অধিকাংশ
- bil-lahi
- بِٱللَّهِ
- in Allah
- উপর আল্লাহর
- illā
- إِلَّا
- except
- ছাড়া যে
- wahum
- وَهُم
- while they
- তখন তারা (বিশ্বাস করলেও)
- mush'rikūna
- مُّشْرِكُونَ
- associate partners with Him
- শিরক করে
Transliteration:
Wa maa yu'minu aksaru hum billaahi illaa wa hum mushrikoon(QS. Yūsuf:106)
English Sahih International:
And most of them believe not in Allah except while they associate others with Him. (QS. Yusuf, Ayah ১০৬)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
অধিকাংশ মানুষ আল্লাহতে বিশ্বাস করে, কিন্তু সাথে সাথে শিরকও করে। (ইউসূফ, আয়াত ১০৬)
Tafsir Ahsanul Bayaan
০৬) তাদের অধিকাংশই আল্লাহকে বিশ্বাস করে; কিন্তু তাঁর অংশী স্থাপন করে। [১]
[১] এটা সেই বাস্তবতা যার বর্ণনা কুরআন সুস্পষ্টাকারে বিভিন্ন স্থানে করেছে। আর তা এই যে, মুশরিকরা তো স্বীকার করত, আকাশ ও পৃথিবীর স্রষ্টা, সবকিছুর মালিক, রুযীদাতা এবং পরিচালক শুধু মহান আল্লাহই। কিন্তু তা সত্ত্বেও ইবাদতে আল্লাহর সাথে অন্যকেও শরীক করত। আর এইভাবেই অধিকাংশ মানুষই মুশরিক। অর্থাৎ প্রত্যেক যুগে লোকেরা তাওহীদে রবূবিয়্যাত (প্রতিপালকত্বের তাওহীদ)-কে তো মেনে নেয়; কিন্তু তাওহীদে উলূহিয়্যাত (উপাসত্বের তাওহীদ)-কে মানতে প্রস্তুত হয় না। বর্তমান যুগের কবর পূজারীদের শিরকও ঠিক এই ধরণের যে, তারা কবরস্থ ব্যক্তিদেরকে উলূহিয়্যাতের গুণাবলীর অধিকারী মনে করে তাদেরকে সাহায্যের জন্য আহবানও করে এবং ইবাদতের বেশ কিছু অনুষ্ঠানও তাদের উদ্দেশ্যে পালন করে। আল্লাহ আমাদেরকে এত্থেকে বাঁচান। আমীন।
Tafsir Abu Bakr Zakaria
তাদের বেশীর ভাগই আল্লাহ্র উপর ঈমান রাখে, তবে তাঁর সাথে (ইবাদতে) শির্ক করা অবস্থায় [১]।
[১] এখানে এমন লোকদের সম্পর্কে বলা হচ্ছে, যারা আল্লাহ্র অস্তিত্বে বিশ্বাসী, কিন্তু তাঁর সাথে অন্য বস্তুকে অংশীদার সাব্যস্ত করে। বলা হয়েছেঃ
(وَمَا يُؤْمِنُ اَكْثَرُهُمْ بِاللّٰهِ اِلَّا وَهُمْ مُّشْرِكُوْنَ)
অর্থাৎ তাদের মধ্যে যারা আল্লাহ্র উপর বিশ্বাস করে, তারাও শির্কের সাথে করে। তারা আল্লাহ্ তা'আলাকে রব, জীবনদাতা, মৃত্যুদাতা স্বীকার করে, কিন্তু তা সত্বেও তারা ইবাদাত করার সময় আল্লাহ্র সাথে অন্যান্যদেরও ইবাদাত করে। [তাবারী; কুরতুবী; বাগভী; ইবন কাসীর; সাদী] তাদের ঈমান হল আল্লাহ্র প্রভূত্বের উপর, আর তাদের শির্ক হল আল্লাহ্র ইবাদাতে। এ আয়াতের মধ্যে ঐ সমস্ত নামধারী মুসলিমও অন্তর্ভুক্ত, যারা আল্লাহ্র ইবাদাতের পাশাপাশি পীর, কবর ইত্যাদির ইবাদাতও করে থাকে।
ইবনে কাসীর বলেনঃ যেসব মুসলিম ঈমান সত্ত্বেও বিভিন্ন প্রকার শির্কে লিপ্ত রয়েছে, তারাও এ আয়াতের অন্তর্ভুক্ত। এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ আমি তোমাদের জন্য যেসব বিষয়ের আশঙ্কা করি, তন্মধ্যে সবচাইতে বিপজ্জনক হচ্ছে ছোট শির্ক। সাহাবায়ে কেরামের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বললেনঃ রিয়া (লোক দেখানো ইবাদাত) হচ্ছে ছোট শির্ক। [মুসনাদে আহমাদ ৫/৪২৯] এমনিভাবে অন্য এক হাদীসে আল্লাহ্ ব্যতীত অন্যের কসম করাকেও শির্ক বলা হয়েছে। [সহীহ ইবনে হিব্বানঃ ১০/১৯৯, হাদীস নং ৪৩৫৮] আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারো নামে মান্নত করা এবং যবেহ্ করা শির্কের অন্তর্ভুক্ত। হাদীসে আরও এসেছে, ‘মুশরিকরা তাদের হজের তালবিয়া পাঠের সময় বলত; ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইক লা শারীকা লাকা, ইল্লা শারীকান হুয়া লাকা তামলিকুহূ ওমা মালাক। (অর্থাৎ আমি হাযির আল্লাহ্ আমি হাযির, আমি হাযির, আপনার কোন শরীক নেই, তবে এমন এক শরীক আছে যার আপনি মালিক, সে আপনার মালিক নয়) এটা বলত। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের এ শির্কী তালবিয়া পড়ার সময় যখন তারা (‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইক লা শারীকা লাকা) পর্যন্ত বলত, তখন তিনি বলতেন যথেষ্ট এতটুকুই বল। [মুসলিম; ১১৮৫] কারণ এর পরের অংশটুকু শির্ক। তারা ঈমানের সাথে শির্ক মিশ্রিত করে ফেলেছে। [ইবন কাসীর]
Tafsir Bayaan Foundation
তাদের অধিকাংশ আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস করে, তবে (ইবাদাতে) শিরক করা অবস্থায়।
Muhiuddin Khan
অনেক মানুষ আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, কিন্তু সাথে সাথে শিরকও করে।
Zohurul Hoque
আর তাদের অধিকাংশই আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাস করে না তারা বহুখোদাবাদী না হওয়া পর্যন্ত।