Skip to content

কুরআন মজীদ সূরা হুদ আয়াত ৯১

Qur'an Surah Hud Verse 91

হুদ [১১]: ৯১ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ

قَالُوْا يٰشُعَيْبُ مَا نَفْقَهُ كَثِيْرًا مِّمَّا تَقُوْلُ وَاِنَّا لَنَرٰىكَ فِيْنَا ضَعِيْفًا ۗوَلَوْلَا رَهْطُكَ لَرَجَمْنٰكَ ۖوَمَآ اَنْتَ عَلَيْنَا بِعَزِيْزٍ (هود : ١١)

qālū
قَالُوا۟
They said
তারা বলেছিলো
yāshuʿaybu
يَٰشُعَيْبُ
"O Shuaib!
"হে শুআইব
مَا
Not
না
nafqahu
نَفْقَهُ
we understand
আমরা বুঝি
kathīran
كَثِيرًا
much
অনেক (কথাই)
mimmā
مِّمَّا
of what
তা হ'তে যা
taqūlu
تَقُولُ
you say
বলো তুমি
wa-innā
وَإِنَّا
and indeed, we
এবং নিশ্চয়ই আমরা
lanarāka
لَنَرَىٰكَ
surely [we] see you
আমরা অবশ্যই তোমাকে দেখছি
fīnā
فِينَا
among us
আমাদের মাঝে
ḍaʿīfan
ضَعِيفًاۖ
weak
দুর্বল হিসেবে
walawlā
وَلَوْلَا
And if not
এবং যদি থাকত না
rahṭuka
رَهْطُكَ
for your family
তোমার স্বজনবর্গ
larajamnāka
لَرَجَمْنَٰكَۖ
surely we would have stoned you
তোমাকে আমরা পাথর ছুড়ে মেরে ফেলতাম
wamā
وَمَآ
and you are not
এবং নও
anta
أَنتَ
and you are not
তুমি
ʿalaynā
عَلَيْنَا
against us
আমাদের উপর
biʿazīzin
بِعَزِيزٍ
mighty"
শক্তিশালী"

Transliteration:

Qaaloo yaa Shu'aibu maa nafqahu kaseeram mimmaa taqoolu wa innaa lanaraaka feenaa da'eefanw wa law laa rahtuka larajamnaaka wa maaa anta 'alainaa bi'azeez (QS. Hūd:91)

English Sahih International:

They said, "O Shuaib, we do not understand much of what you say, and indeed, we consider you among us as weak. And if not for your family, we would have stoned you [to death]; and you are not to us one respected." (QS. Hud, Ayah ৯১)

তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):

তারা বলল, ‘হে শু‘আয়ব! তুমি যা বল তার অনেক কথাই আমরা বুঝি না, আমরা আমাদের মধ্যে তোমাকে অবশ্যই দুর্বল দেখছি, তোমার গোত্র না থাকলে আমরা তোমাকে অবশ্যই পাথর নিক্ষেপ ক’রে মেরে ফেলতাম, আমাদের উপর তোমার কোন ক্ষমতাই নেই। (হুদ, আয়াত ৯১)

Tafsir Ahsanul Bayaan

তারা বলল, ‘হে শুআইব! তুমি যা বল, তার অনেক কথা আমাদের বুঝে আসে না[১] এবং আমরা অবশ্যই নিজেদের মধ্যে তোমাকে দুর্বল দেখছি।[২] তোমার স্বজনবর্গ না থাকলে আমরা তোমাকে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলতাম।[৩] আর তুমি আমাদের উপর পরাক্রমশালীও নও।’ [৪]

[১] এই কথা তারা হয় ঠাট্টা-বিদ্রূপ স্বরূপ বলেছিল। কারণ প্রকৃতপক্ষে তাঁর কথা যে তারা বুঝতো না -তা নয়। সুতরাং এই অবস্থাতে এখানে বুঝতে না পারার কথা রূপকার্থে হবে। অথবা তাদের উদ্দেশ্য গায়েব সম্পর্কিত কথা বুঝতে না পারার ওজর প্রকাশ করা। যেমন মরণের পর পুনর্জীবন, হাশর, জান্নাত ও জাহান্নাম ইত্যাদি। এই হিসাবে বুঝতে না পারার কথা প্রকৃতার্থে ধরা হবে।

[২] এ দুর্বলতা শারীরিক দুর্বলতা ছিল, যেমন অনেকের মতে শুআইব (আঃ) চোখে কম দেখতেন অথবা তিনি শারীরিক দিক থেকে শীর্ণকায় ও পাতলা ছিলেন অথবা এই জন্য তাঁকে দুর্বল বলেছে যে, তিনি নিজে একা বিরোধীদের সাথে মুকাবিলা করার ক্ষমতা রাখতেন না।

[৩] বলা হয় যে, শুআইব (আঃ)-এর স্বগোত্র থেকে তাঁর কোন সমর্থক ছিল না, কিন্তু সে গোত্র যেহেতু কুফর ও শিরকের দিক থেকে তাঁর জাতির সাথে ছিল, ফলে একই ধর্মাবলম্বী হওয়ার কারণে সেই গোত্রের খেয়াল শুআ'ইব (আঃ)-এর সাথে কঠিন দুর্ব্যবহার করা এবং তাঁর ক্ষতি সাধন করাতে বাধা হয়ে ছিল।

[৪] যেহেতু তোমার গোত্রের মর্যাদা আমাদের অন্তরে আছে, সেহেতু আমরা ক্ষমার চোখে দেখছি।

Tafsir Abu Bakr Zakaria

তাঁরা বলল , ‘হে শু’আইব ! তুমি যা বল তার অনেক কথা আমরা বুঝি না [১] এবং আমরা তো আমাদের মধ্যে তোমাকে দুর্বলই দেখেছি। তোমার স্বজনবর্গ না থাকলে আমরা তোমাকে পাথর নিক্ষেপ করে মেরে ফেলতাম , আর আমাদের উপর তুমি শক্তিশালী নও [২]।’

[১] শু'আইব কোন বিদেশী ভাষায় কথা বলছিলেন তাই তারা বুঝতে পারছিল না, এমন কোন ব্যাপার ছিল না। অথবা তাঁর কথা কঠিন, সূক্ষ্ম বা জটিলও ছিল না। কথা সবই সোজা ও পরিষ্কার ছিল। সেখানকার প্রচলিত ভাষায়ই কথা বলা হতো। তাহলে তারা কেন বুঝলো না? এর দু’টি কারণ হতে পারে। এক. তাদের মানসিক কাঠামো এত বেশী বেঁকে গিয়েছিল যে, শু'আইব আলাইহিস সালামের সোজা সরল কথাবার্তা তার মধ্যে কোন প্রকারেই প্রবেশ করতে পারতো না। তাদের চিন্তাধারা থেকে ভিন্নতর কিছু শোনার কারণে তারা বলতে থাকে যে, এসব আবার কেমন ধারার কথা! তারা বলল যে, আমরা বুঝিনা। তারা এটা অপমানসূচক তাদের নবীকে বলেছিল। দুই. অথবা তারা সত্যি সত্যিই বুঝতে চেষ্টা করছিল না। তাদের বক্তব্য হলো, আপনি আমাদেরকে পুনরুত্থান, ও হাশর-নশরের মত গায়েবী বিষয় বলছেন, এমন কিছুর উপদেশ দিচ্ছেন যা আগে আমরা বুঝিনি। [কুরতুবী]

[২] একথা অবশ্যি সামনে থাকা দরকার যে, এ আয়াতগুলো যখন নাযিল হয় তখন হুবহু একই রকম অবস্থা মক্কাতেও বিরাজ করছিল। সে সময় কুরাইশরাও একই ভাবে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রক্ত পিপাসু হয়ে উঠেছিল। তারা তাঁর জীবননাশ করতে চাচ্ছিল। কিন্তু শুধু বনী হাশেম তাঁর পেছনে ছিল বলেই তাঁর গায়ে হাত দিতে ভয় পাচ্ছিল। কাজেই শু'আইব আলাইহিস সালাম ও তার কওমের এ ঘটনাকে যথাযথভাবে কুরাইশ ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অবস্থার সাথে খাপ খাইয়ে দিয়ে বর্ণনা করা হচ্ছে এবং সামনের দিকে শু'আইব আলাইহিস সালামের যে চরম শিক্ষণীয় জবাব উদ্ধৃত করা হয়েছে তার মধ্যে এ অর্থ লুকিয়ে রয়েছে যে, হে কুরাইশের লোকেরা! তোমাদের জন্যও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পক্ষ থেকে এ একই জবাব দেয়া হলো।

Tafsir Bayaan Foundation

তারা বলল, ‘হে শু‘আইব, তুমি যা বল, তার অনেক কিছুই আমরা বুঝি না। আর তোমাকে তো আমরা আমাদের মধ্যে দুর্বলই দেখতে পাচ্ছি। যদি তোমার আত্মীয়-স্বজন না থাকত, তবে আমরা তোমাকে অবশ্যই পাথর মেরে হত্যা করতাম। আর আমাদের উপর তুমি শক্তিশালী নও’।

Muhiuddin Khan

তারা বলল-হে শোয়ায়েব (আঃ) আপনি যা বলেছেন তার অনেক কথাই আমরা বুঝি নাই, আমারা তো আপনাকে আমাদের মধ্যে দূর্বল ব্যক্তি রূপে মনে করি। আপনার ভাই বন্ধুরা না থাকলে আমরা আপনাকে প্রস্তরাঘাতে হত্যা করতাম। আমাদের দৃষ্টিতে আপনি কোন মর্যাদাবান ব্যক্তি নন।

Zohurul Hoque

তারা বললে -- ''হে শোআইব! তুমি যা বল তার অধিকাংশই আমরা বুঝি না, আর আমরা অবশ্য আমাদের মধ্যে তোমাকে দুর্বলই তো দেখছি, আর তোমার পরিজনবর্গের জন্যে না হলে আমরা তোমাকে পাথর মেরেই শেষ করতাম, আর তুমি আমাদের উপরে মোটেই শক্তিশালী নও।’’