কুরআন মজীদ সূরা হুদ আয়াত ৪৩
Qur'an Surah Hud Verse 43
হুদ [১১]: ৪৩ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ
قَالَ سَاٰوِيْٓ اِلٰى جَبَلٍ يَّعْصِمُنِيْ مِنَ الْمَاۤءِ ۗقَالَ لَا عَاصِمَ الْيَوْمَ مِنْ اَمْرِ اللّٰهِ اِلَّا مَنْ رَّحِمَ ۚوَحَالَ بَيْنَهُمَا الْمَوْجُ فَكَانَ مِنَ الْمُغْرَقِيْنَ (هود : ١١)
- qāla
- قَالَ
- He said
- সে বললো
- saāwī
- سَـَٔاوِىٓ
- "I will betake myself
- "আমি শীঘ্রই আশ্রয় নিবো
- ilā
- إِلَىٰ
- to
- দিকে
- jabalin
- جَبَلٍ
- a mountain
- এমন এক পাহাড়ের
- yaʿṣimunī
- يَعْصِمُنِى
- (that) will save me
- যা আমাকে রক্ষা করবে
- mina
- مِنَ
- from
- থেকে
- l-māi
- ٱلْمَآءِۚ
- the water"
- প্লাবন"
- qāla
- قَالَ
- He said
- (নূহ) বললো
- lā
- لَا
- "(There is) no
- "নেই
- ʿāṣima
- عَاصِمَ
- protector
- কোন রক্ষাকারী
- l-yawma
- ٱلْيَوْمَ
- today
- আজ
- min
- مِنْ
- from
- থেকে
- amri
- أَمْرِ
- the Command of Allah
- নির্দেশ
- l-lahi
- ٱللَّهِ
- the Command of Allah
- আল্লাহর
- illā
- إِلَّا
- except
- এ ছাড়া
- man
- مَن
- (on) whom
- যাকে
- raḥima
- رَّحِمَۚ
- He has mercy"
- তিনি দয়া করবেন"
- waḥāla
- وَحَالَ
- And came
- এ সময়ে আড়াল হয়ে দাড়ালো
- baynahumā
- بَيْنَهُمَا
- (in) between them
- তাদে্র দু'জনের মাঝে
- l-mawju
- ٱلْمَوْجُ
- the waves
- ঢেউ
- fakāna
- فَكَانَ
- so he was
- অতঃপর সে হলো
- mina
- مِنَ
- among
- অন্তর্ভুক্ত
- l-mugh'raqīna
- ٱلْمُغْرَقِينَ
- the drowned
- নিমজ্জিতদের
Transliteration:
Qaala sa aaweee ilaa jabaliny ya'simunee minal maaa'; qaala laa 'aasimal yawma min amril laahi illaa mar rahim; wa haala bainahumal mawju fakaana minal mughraqeen(QS. Hūd:43)
English Sahih International:
[But] he said, "I will take refuge on a mountain to protect me from the water." [Noah] said, "There is no protector today from the decree of Allah, except for whom He gives mercy." And the waves came between them, and he was among the drowned. (QS. Hud, Ayah ৪৩)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
সে (অর্থাৎ নূহের পুত্র) বলল, ‘আমি এক্ষুণি পাহাড়ে আশ্রয় নেব যা আমাকে পানি থেকে রক্ষা করবে।’ নূহ বলল, ‘আজ আল্লাহর হুকুম থেকে কোন কিছুই রক্ষা করতে পারবে না, অবশ্য আল্লাহ যার প্রতি দয়া করবেন সে রক্ষা পাবে।’ অতঃপর ঢেউ তাদের দু’জনার মাঝে আড়াল করল আর সে ডুবে যাওয়া লোকেদের মধ্যে শামিল হয়ে গেল। (হুদ, আয়াত ৪৩)
Tafsir Ahsanul Bayaan
সে বলল, ‘আমি এমন কোন পাহাড়ে আশ্রয় গ্রহণ করব, যা আমাকে পানি হতে রক্ষা করবে।’[১] সে বলল, ‘আজ আল্লাহর শাস্তি হতে কেউই রক্ষাকারী নেই। তবে তিনি যার প্রতি দয়া করবেন, সে (রক্ষা পাবে)।’ ইতিমধ্যে তাদের উভয়ের মাঝে একটি তরঙ্গ অন্তরাল হয়ে পড়ল। অতঃপর সে ডুবে যাওয়া লোকেদের অন্তর্ভুক্ত হল।[২]
[১] তার ধারণা ছিল যে, কোন উঁচু পর্বতের চূড়ায় চড়ে আমি পরিত্রাণ পেয়ে যাব, সেখানে পানি কিভাবে পৌঁছবে?
[২] পিতা-পুত্রের মাঝে এই সব কথোপকথন চলছিল, এমন সময় এক উত্তাল তরঙ্গ এসে তাকে ডুবিয়ে দিল।
Tafsir Abu Bakr Zakaria
সে বলল, ‘আমি এমন এক পর্বতে আশ্রয় নেব যা আমাকে পানি হতে রক্ষা করবে।’ তিনি বললেন, ‘আজ আল্লাহ্র হুকুম থেকে রক্ষা করার কেউ নেই, তবে যাকে আল্লাহ্ দয়া করবেন সে ছাড়া।’ আর তরঙ্গ তাদের মধ্যে অন্তরায় হয়ে গেল, ফলে সে নিমজ্জিতদের অন্তর্ভুক্ত হল [১]।
[১] এ আয়াতে বলা হয়েছে যে নূহ আলাইহিসসালামের পরিবারবর্গ কিশতিতে আরোহন করল, কিন্তু একটি ছেলে বাইরে রয়ে গেল। কোন কোন মুফাসসির বলেন এর নাম হচ্ছে, ইয়াম। [ইবন কাসীর] অপর কারো মতে, কিন’আন [কুরতুবী] তখন পিতৃসুলভ স্নেহবশতঃ নূহ আলাইহিসসালাম তাকে ডেকে বললেন প্রিয় বৎস! আমাদের সাথে নৌকায় আরোহন কর; কাফেরদের সাথে থেকো না, তাহলে পানিতে ডুবে মরবে। কাফের ও দুশমনদের সাথে উক্ত ছেলেটির যোগসাজস ছিল এবং সে নিজেও কাফের ছিল। কিন্তু নূহ আলাইহিসসালাম তার কাফের হওয়া সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে অবহিত ছিলেন না।[কুরতুবী] পক্ষান্তরে যদি তিনি তার কুফর সম্পর্কে অবহিত থেকে থাকেন তাহলে তার আহবানের মর্ম হবে নৌকায় আরোহনের পূর্বশর্ত হিসাবে কুফরী হতে তওবা করে ঈমান আনার দাওয়াত এবং কাফেরদের সঙ্গ পরিত্যাগ করার উপদেশ দিয়েছেন। [মুয়াসসার]। কিন্তু হতভাগা প্লাবনকে অগ্রাহ্য করে বলেছিল, আপনি চিন্তিত হবেন না। আমি পর্বতশীর্ষে আরোহণ করে প্লাবন হতে আত্নরক্ষা করব। নূহ আলাইহিসসালাম পুনরায় তাকে সতর্ক করে বললেন যে, আজকে কোন উচু পর্বত বা প্রাসাদ কাউকে আল্লাহর আযাব হতে রক্ষা করতে পারবে না। আল্লাহর খাস রহমত ছাড়া বাঁচার অন্য কোন উপায় নেই। দূর থেকে পিতা পুত্রের কথোপকথন চলছিল। এমন সময় সহসা এক উত্তাল তরঙ্গ এসে উভয়ের মাঝে অন্তরালের সৃষ্টি করল এবং নিমজ্জিত করল। আলোচ্য আয়াতের শেষাংশে বলা হয়েছে যে যমীন ও আসমান হুকুম পালন করল, প্লাবন সমাপ্ত হল, জুদী পাহাড়ে নৌকা ভিড়ল আর বলে দেয়া হল যে দুরাত্মা কাফেররা চিরকালের জন্য আল্লাহর রহমত হতে দূরীভূত হয়েছে।
Tafsir Bayaan Foundation
সে বলল, ‘অচিরেই আমি একটি পাহাড়ে আশ্রয় নেব, যা আমাকে পানি থেকে রক্ষা করবে’। সে (নূহ) বলল, ‘যার প্রতি আল্লাহ দয়া করেছেন সে ছাড়া আজ আল্লাহর আদেশ থেকে কোন রক্ষাকারী নেই’। এরপর তাদের উভয়ের মধ্যে ঢেউ অন্তরায় হয়ে গেল। অতঃপর সে নিমজ্জিতদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল ।
Muhiuddin Khan
সে বলল, আমি অচিরেই কোন পাহাড়ে আশ্রয় নেব, যা আমাকে পানি হতে রক্ষা করবে। নূহ (আঃ) বল্লেন আজকের দিনে আল্লাহর হুকুম থেকে কোন রক্ষাকারী নেই। একমাত্র তিনি যাকে দয়া করবেন। এমন সময় উভয়ের মাঝে তরঙ্গ আড়াল হয়ে দাঁড়াল, ফলে সে নিমজ্জিত হল।
Zohurul Hoque
সে বললে -- ''আমি এখনি কোনো পাহাড়ে আশ্রয় নেব, তা আমাকে প্লাবন থেকে রক্ষা করবে।’’ তিনি বললেন -- ''আজকের দিনে আল্লাহ্র হুকুম থেকে রক্ষা করার কেউ নেই, শুধু সে যাকে তিনি দয়া করবেন।’’ আর তাদের উভয়ের মধ্যে ঢেউ এসে পড়ল, ফলে সে হয়ে গেল নিমজ্জিতদের অন্তর্ভুক্ত।