কুরআন মজীদ সূরা হুদ আয়াত ১৩
Qur'an Surah Hud Verse 13
হুদ [১১]: ১৩ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ
اَمْ يَقُوْلُوْنَ افْتَرٰىهُ ۗقُلْ فَأْتُوْا بِعَشْرِ سُوَرٍ مِّثْلِهٖ مُفْتَرَيٰتٍ وَّادْعُوْا مَنِ اسْتَطَعْتُمْ مِّنْ دُوْنِ اللّٰهِ اِنْ كُنْتُمْ صٰدِقِيْنَ (هود : ١١)
- am
- أَمْ
- Or
- অথবা
- yaqūlūna
- يَقُولُونَ
- they say
- তারা বলে
- if'tarāhu
- ٱفْتَرَىٰهُۖ
- "He has fabricated it"
- "তা সে রচনা করেছে"
- qul
- قُلْ
- Say
- বলো
- fatū
- فَأْتُوا۟
- "Then bring
- "তবে তোমরা আনো
- biʿashri
- بِعَشْرِ
- ten
- নিয়ে দশটি
- suwarin
- سُوَرٍ
- Surahs
- সূরা
- mith'lihi
- مِّثْلِهِۦ
- like it
- তার মতো
- muf'tarayātin
- مُفْتَرَيَٰتٍ
- fabricated
- স্বরচিত
- wa-id'ʿū
- وَٱدْعُوا۟
- and call
- এবং তোমরা ডাকো
- mani
- مَنِ
- whoever
- যাকে
- is'taṭaʿtum
- ٱسْتَطَعْتُم
- you can
- তোমরা পারো
- min
- مِّن
- besides Allah
- মধ্য হতে
- dūni
- دُونِ
- besides Allah
- ছাড়া
- l-lahi
- ٱللَّهِ
- besides Allah
- আল্লাহ
- in
- إِن
- if
- যদি
- kuntum
- كُنتُمْ
- you are
- তোমরা হও
- ṣādiqīna
- صَٰدِقِينَ
- truthful"
- সত্যবাদী"
Transliteration:
Am yaqooloonaf taraahu qul faatoo bi'ashri Suwarim mislihee muftarayaatinw wad'oo manis tata'tum min doonil laahi in kuntum saadiqeen(QS. Hūd:13)
English Sahih International:
Or do they say, "He invented it"? Say, "Then bring ten Surahs like it that have been invented and call upon [for assistance] whomever you can besides Allah, if you should be truthful." (QS. Hud, Ayah ১৩)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
তারা কি বলে ‘‘সে [অর্থাৎ মুহাম্মাদ (সা.)] ওটা রচনা করেছে? বল, ‘‘তাহলে তোমরা এর মত দশটি সূরাহ রচনা করে আন, আর (এ কাজে সাহায্য করার জন্য) আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাকে ডাকতে পার ডেকে নাও যদি তোমরা সত্যবাদী হয়েই থাক । (হুদ, আয়াত ১৩)
Tafsir Ahsanul Bayaan
তবে কি তারা বলে যে, ওটা সে নিজে রচনা করেছে? বল, ‘তাহলে তোমরাও ওর অনুরূপ স্বরচিত দশটি সূরা আনয়ন কর এবং (সাহায্যার্থে) আল্লাহ ছাড়া যাকে ডাকতে পার ডেকে নাও; যদি তোমরা সত্যবাদী হও।’ [১]
[১] ইমাম ইবনে কাসীর লিখেছেন যে, প্রথমে আল্লাহ তাআলা চ্যালেঞ্জ দিয়েছেন যে, যদি তোমরা তোমাদের এই দাবীতে সত্যবাদী হও যে, এই কুরআন মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর সবরচিত, তাহলে তোমরা তার মত কুরআন রচনা করে দেখাও; তাতে তোমরা যার ইচ্ছা সাহায্য নিতে পার। কিন্তু তোমরা এরূপ কক্ষনো করতে সক্ষম হবে না। মহান আল্লাহ বলেন, (قُلْ لَئِنِ اجْتَمَعَتِ الْأِنْسُ وَالْجِنُّ عَلَى أَنْ يَأْتُوا بِمِثْلِ هَذَا الْقُرْآنِ لا يَأْتُونَ بِمِثْلِهِ وَلَوْ كَانَ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ ظَهِيرًا) অর্থাৎ, বল, যদি এই কুরআনের অনুরূপ কুরআন আনয়নের জন্য মানুষ ও জীন সমবেত হয় এবং তারা পরস্পরকে সাহায্য করে, তবুও তারা এর অনুরূপ কুরআন আনয়ন করতে পারবে না।" (সূরা বনী ইস্রাঈল ১৭;৮৮) তারপর আল্লাহ তাআলা এই চ্যালেঞ্জ দিলেন যে, পূর্ণ কুরআন রচনা করে পেশ করতে না পারলে, দশটি সূরাই রচনা করে পেশ কর। যেমন এই আয়াতে বলা হয়েছে। পুনরায় তৃতীয় চ্যালেঞ্জ দিলেন যে, একটি সূরাই রচনা করে পেশ কর। যেমন সূরা ইউনুসের ১০;৩৮ নং আয়াতে এবং সূরা বাক্বারার শুরুতে এ কথা বলেছেন। (তাফসীর ইবনে কাসীর) এর পরিপ্রেক্ষিতে শেষ চ্যালেঞ্জ এ হতে পারে যে, অনুরূপ একটি কথাই তৈরী করে পেশ কর। যেমন আল্লাহ বলেন, (فَلْيَأْتُوا بِحَدِيثٍ مِثْلِهِ إِنْ كَانُوا صَادِقِين) অর্থাৎ, তারা যদি সত্যবাদী হয়, তাহলে এর সদৃশ কোন কথা উপস্থিত করুক না। (সূরা ত্বুর ৫২;৩৪) কিন্তু অবতীর্ণ হওয়ার পর্যায়ক্রম অনুসারে পর্যায়ক্রম এই চ্যালেঞ্জের সমর্থন পাওয়া যায় না। আর আল্লাহই ভালো জানেন।
Tafsir Abu Bakr Zakaria
নাকি তারা বলে, ‘সে এটা নিজে রটনা করেছে?’ বলুন, ‘তোমরা যদি (তোমাদের দাবীতে) সত্যবাদী হও তবে তোমরা এর অনুরূপ দশটি সূরা রচনা করে নিয়ে আস এবং আল্লাহ্ ছাড়া অন্য যাকে পার (এ ব্যাপারে সাহায্যের জন্য) ডেকে নাও [১]।’
[১] আলোচ্য আয়াতে মুশরিকদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামের বড় মু'জিযা কুরআন তোমাদের সম্মুখে রয়েছে, যার অলৌকিকত্ব তোমরা অস্বীকার করতে পার না। তোমরা যদি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামের সত্যতার প্রমাণস্বরূপ মু'জিযার দাবী করে থাক তাহলে কুরআনের মাধ্যমে তোমাদের দাবী পুরণ করা হয়েছে। সুতরাং নতুন কোন মু'জিযা দাবী করার কোন অধিকার তোমাদের নেই। আর যদি তারা বলতে চায় যে, কুরআন মজিদ আল্লাহর কালাম নয়; বরং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বয়ং তা রচনা করেছেন? যদি তোমরা তাই মনে করে থাক তা হলে, তোমরা অনুরূপ দশটি সূরা রচনা করে দেখাও। আর একই ব্যক্তি দশটি সূরা তৈরি করতে হবে, এমন কোন বাধ্য-বাধকতা নেই। বরং সারা দুনিয়ার পণ্ডিত, সাহিত্যিক মানুষ, জিন, তথা দেব দেবী সবাই মিলেই তা রচনা কর। কিন্তু তারা যখন দশটি সূরাও তৈরী করতে পারছে না, তাই আপনি বলুন যে, এই কুরআন যদি কোন মানুষের রচিত কালাম হতো তাহলে অন্য মানুষেরাও অনুরূপ কালাম রচনা করতে সক্ষম হতো। সকলের অপারগ হওয়াই এর প্রকৃষ্ট প্রমাণ যে, এই কুরআন আল্লাহ পাকের কালাম, এটি ইলম ও কুদরতে নাযিল হয়েছে। এটা রচনা করা মানুষের সাধ্যাতীত।
Tafsir Bayaan Foundation
নাকি তারা বলে, ‘সে এটা রটনা করেছে’? বল, ‘তাহলে তোমরা এর অনুরূপ দশটি সূরা বানিয়ে নিয়ে আস এবং আল্লাহ ছাড়া যাকে পার ডেকে আন, যদি তোমরা সত্যবাদী হও’।
Muhiuddin Khan
তারা কি বলে? কোরআন তুমি তৈরী করেছ? তুমি বল, তবে তোমরাও অনুরূপ দশটি সূরা তৈরী করে নিয়ে আস এবং আল্লাহ ছাড়া যাকে পার ডেকে নাও, যদি তোমাদের কথা সত্য হয়ে থাকে।
Zohurul Hoque
অথবা তারা কি বলে -- ''সে এটি বানিয়েছে?’’ বলো -- ''তাহলে এর মত দশটি বানানো সূরা নিয়ে এস, আর আল্লাহ্কে ছেড়ে দিয়ে যাকে পার ডাকো, যদি তোমরা সত্যবাদী হও।’’