কুরআন মজীদ সূরা হুদ আয়াত ১২
Qur'an Surah Hud Verse 12
হুদ [১১]: ১২ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ
فَلَعَلَّكَ تَارِكٌۢ بَعْضَ مَا يُوْحٰىٓ اِلَيْكَ وَضَاۤىِٕقٌۢ بِهٖ صَدْرُكَ اَنْ يَّقُوْلُوْا لَوْلَآ اُنْزِلَ عَلَيْهِ كَنْزٌ اَوْ جَاۤءَ مَعَهٗ مَلَكٌ ۗاِنَّمَآ اَنْتَ نَذِيْرٌ ۗ وَاللّٰهُ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ وَّكِيْلٌ ۗ (هود : ١١)
- falaʿallaka
- فَلَعَلَّكَ
- Then possibly you
- তবে যেন তুমি (না)
- tārikun
- تَارِكٌۢ
- (may) give up
- পরিত্যাগকারী (হয়ো)
- baʿḍa
- بَعْضَ
- a part
- কিছু অংশ
- mā
- مَا
- (of) what
- (তার) যা
- yūḥā
- يُوحَىٰٓ
- is revealed
- ওহী করা হয়েছে
- ilayka
- إِلَيْكَ
- to you
- তোমার প্রতি
- waḍāiqun
- وَضَآئِقٌۢ
- and straitened
- এবং (যেন না) সংকুচিত করো
- bihi
- بِهِۦ
- by it
- সম্পর্কে সে
- ṣadruka
- صَدْرُكَ
- your breast
- তোমার মন
- an
- أَن
- because
- (এজন্যে) যে
- yaqūlū
- يَقُولُوا۟
- they say
- তারা বলে
- lawlā
- لَوْلَآ
- "Why not
- "কেন না
- unzila
- أُنزِلَ
- is sent down
- অবতীর্ণ করা হলো
- ʿalayhi
- عَلَيْهِ
- for him
- তার উপর
- kanzun
- كَنزٌ
- a treasure
- ধন ভান্ডার
- aw
- أَوْ
- or
- অথবা
- jāa
- جَآءَ
- has come
- (কেন না) আসে
- maʿahu
- مَعَهُۥ
- with him
- তার সাথে
- malakun
- مَلَكٌۚ
- an Angel?"
- কোন ফেরেশতা"
- innamā
- إِنَّمَآ
- Only
- মূলতঃ
- anta
- أَنتَ
- you
- তুমি
- nadhīrun
- نَذِيرٌۚ
- (are) a warner
- একজন সতর্ককারী (মাত্র)
- wal-lahu
- وَٱللَّهُ
- And Allah
- এবং আল্লাহ
- ʿalā
- عَلَىٰ
- (is) on
- উপর
- kulli
- كُلِّ
- every
- সব
- shayin
- شَىْءٍ
- thing
- কিছুর
- wakīlun
- وَكِيلٌ
- a Guardian
- কর্ম বিধায়ক
Transliteration:
Fala'allaka taarikum ba'da maa yoohaaa ilaika wa daaa'iqum bihee sadruka ai yaqooloo law laaa unzila 'alaihi kanzun aw jaaa'a ma'ahoo malak; innamaa anta nazeer; wallaahu 'alaa kulli shai'inw wakeel(QS. Hūd:12)
English Sahih International:
Then would you possibly leave [out] some of what is revealed to you, or is your breast constrained by it because they say, "Why has there not been sent down to him a treasure or come with him an angel?" But you are only a warner. And Allah is Disposer of all things. (QS. Hud, Ayah ১২)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
তুমি কি তোমার প্রতি যা ওয়াহী করা হয়েছে তার কিছু অংশ পরিত্যাগ করতে চাও আর তোমার মন সংকুচিত করতে চাও তাদের এ কথা বলার কারণে যে ‘‘তার কাছে ধনভান্ডার অবতীর্ণ হয় না কেন, কিংবা তার কাছে ফেরেশতা আসে না কেন?’’ তুমি তো কেবল ভয় প্রদর্শনকারী, যাবতীয় কাজ পরিচালনার দায়িত্ব আল্লাহর। (হুদ, আয়াত ১২)
Tafsir Ahsanul Bayaan
তোমার নিকট যা অহী (প্রত্যাদেশ) করা হয়, সম্ভবতঃ তুমি হয়তো তার কিছু অংশ বর্জন করবে এবং ‘তার প্রতি কোন ধনভান্ডার অবতীর্ণ করা হয়নি কেন? অথবা তার সাথে কোন ফিরিশতা আসেনি কেন?’ তাদের এই কথায় তোমার মন সঙ্কুচিত হবে। (কিন্তু হে নবী!) তুমি তো শুধুমাত্র একজন সতর্ককারী।[১] আর আল্লাহই হচ্ছেন প্রত্যেক বস্তুর উপর দায়িত্বশীল।
[১] মুশরিকরা নবী (সাঃ) সম্পর্কে বলত যে, তাঁর উপর কোন ফিরিশতা অবতীর্ণ করা হয় না কেন? কিংবা তাঁর নিকট কোন ধনভান্ডার অবতীর্ণ করা হয় না কেন। (সূরা ফুরক্বান ২৫;৭-৮) অন্য এক স্থানে বলা হয়েছে "আমি জানি যে, তারা তোমার ব্যাপারে যে কথা বলে, তাতে তোমার হৃদয় সংকুচিত হয়।" (সূরা হিজর ১৫;৯৭) এই আয়াতে ঐ সকল উক্তি সম্পর্কে বলা হচ্ছে যে, সম্ভবতঃ তাতে তোমার হৃদয় সংকুচিত হয়, আর কিছু কথা যা তোমার নিকট অহী করা হয়, তা মুশরিকদের উপর কষ্টকর মনে হয়, হতে পারে যে, তুমি তা তাদেরকে শুনাতে পছন্দ করবে না। কিন্তু তোমার কাজ শুধু সতর্ক ও তবলীগ করা, তা তুমি সর্বাবস্থায় চালিয়ে যাও।
Tafsir Abu Bakr Zakaria
তবে কি আপনার প্রতি যা নাযিল করা হয়েছ তার কিছু আপনি বর্জন করবেন এবং তাতে আপনার মন সংকুচিত হবে এজন্য যে, তারা বলে, ‘তার কাছে ধন-ভাণ্ডার নামানো হয় না কেন অথবা তার সাথে ফিরিশ্তা আসে না কেন?’ আপনি তো কেবল সতর্ককারী এবং আল্লাহ্ সবকিছুর কর্মবিধায়ক [১]।
[১] এ আয়াতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি কাফেরদের কিছু অন্যায় আব্দারের কারণে তার মনের যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল তার জবাব দিয়ে সাত্ত্বনা দেয়া হয়েছে। [ইবন কাসীর] মূলতঃ তাদের আবদার ছিল নিরেট মুর্খতা ও চরম অজ্ঞতাপ্রসূত। যেমন এক আয়াতে এসেছে, “আরও তারা বলে , এ কেমন রাসূল যে খাওয়া-দাওয়া করে এবং হাটে-বাজারে চলাফেরা করে; তার কাছে কোন ফিরিশতা কেন নাযিল করা হল না, যে তার সংগে থাকত সতর্ককারীরূপে? অথবা তার কাছে কোন ধনভাণ্ডার এসে পড়ল না কেন অথবা তার একটি বাগান নেই কেন, যা থেকে সে খেতো ? যালিমরা আরো বলে, “তোমরা তো এক জাদুগ্রস্ত ব্যক্তিরই অনুসরণ করছ।” [সূরা আল-ফুরকান ৭-৮] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মু'জিযাস্বরূপ সাথে সাথে যদি কোন ফেরেশতা থাকতেন, তবে যখনই কেউ তাকে অমান্য করত তৎক্ষনাৎ গযবে পতিত হয়ে ধ্বংস হত।
Tafsir Bayaan Foundation
তাহলে সম্ভবত তুমি তোমার উপর অবতীর্ণ ওহীর কিছু বিষয় ছেড়ে দেবে এবং তোমার বুক সঙ্কুচিত হবে এ কারণে যে, তারা বলে, ‘কেন তার উপর ধন-ভান্ডার অবতীর্ণ হয়নি, কিংবা তার সাথে ফেরেশতা আসেনি’? তুমি তো শুধু সতর্ককারী আর আল্লাহ সব কিছুর তত্ত্বাবধায়ক।
Muhiuddin Khan
আর সম্ভবতঃ ঐসব আহকাম যা ওহীর মাধ্যমে তোমার নিকট পাঠানো হয়, তার কিছু অংশ বর্জন করবে? এবং এতে মন ছোট করে বসবে? তাদের এ কথায় যে, তাঁর উপর কোন ধন-ভান্ডার কেন অবতীর্ণ হয়নি? অথবা তাঁর সাথে কোন ফেরেশতা আসেনি কেন? তুমিতো শুধু সতর্ককারী মাত্র; আর সব কিছুরই দায়িত্বভার তো আল্লাহই নিয়েছেন।
Zohurul Hoque
তুমি কি তবে পরিত্যাগকারী হবে তোমার কাছে যা প্রত্যাদিষ্ট হয়েছে তার কিছু অংশ, আর তোমার বক্ষ এর দ্বারা সংকুচিত করবে যেহেতু তারা বলে -- ''তার কাছে কেন কোনো ধনভান্ডার পাঠানো হয় না অথবা তার সঙ্গে কোনো ফিরিশ্তা আসে না?’’ নিঃসন্দেহ তুমি তো একজন সতর্ককারী। আর আল্লাহ্ সব-কিছুর উপরে কর্ণধার।