কুরআন মজীদ সূরা ইউনুস আয়াত ৩১
Qur'an Surah Yunus Verse 31
ইউনুস [১০]: ৩১ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ
قُلْ مَنْ يَّرْزُقُكُمْ مِّنَ السَّمَاۤءِ وَالْاَرْضِ اَمَّنْ يَّمْلِكُ السَّمْعَ وَالْاَبْصَارَ وَمَنْ يُّخْرِجُ الْحَيَّ مِنَ الْمَيِّتِ وَيُخْرِجُ الْمَيِّتَ مِنَ الْحَيِّ وَمَنْ يُّدَبِّرُ الْاَمْرَۗ فَسَيَقُوْلُوْنَ اللّٰهُ ۚفَقُلْ اَفَلَا تَتَّقُوْنَ (يونس : ١٠)
- qul
- قُلْ
- Say
- বলো
- man
- مَن
- "Who
- "কে
- yarzuqukum
- يَرْزُقُكُم
- provides for you
- জীবিকা দেন তোমাদের
- mina
- مِّنَ
- from
- থেকে
- l-samāi
- ٱلسَّمَآءِ
- the sky
- আকাশ
- wal-arḍi
- وَٱلْأَرْضِ
- and the earth?
- ও পৃথিবী (থেকে)
- amman
- أَمَّن
- Or who
- অথবা কে
- yamliku
- يَمْلِكُ
- controls
- কর্তৃত্ব রাখেন
- l-samʿa
- ٱلسَّمْعَ
- the hearing
- শ্রবণশক্তির
- wal-abṣāra
- وَٱلْأَبْصَٰرَ
- and the sight?
- ও দৃষ্টিশক্তিসমূহের
- waman
- وَمَن
- And who
- এবং কে
- yukh'riju
- يُخْرِجُ
- brings out
- বের করেন
- l-ḥaya
- ٱلْحَىَّ
- the living
- জীবন্তকে
- mina
- مِنَ
- from
- হতে
- l-mayiti
- ٱلْمَيِّتِ
- the dead
- মৃত
- wayukh'riju
- وَيُخْرِجُ
- and brings forth
- এবং (কে) বের করেন
- l-mayita
- ٱلْمَيِّتَ
- the dead
- মৃতকে
- mina
- مِنَ
- from
- হতে
- l-ḥayi
- ٱلْحَىِّ
- the living?
- জীবন্ত
- waman
- وَمَن
- And who
- এবং কে
- yudabbiru
- يُدَبِّرُ
- disposes
- পরিচালনা করেন
- l-amra
- ٱلْأَمْرَۚ
- the affairs?"
- (বিশ্ব ব্যবস্থার সকল) কাজ"
- fasayaqūlūna
- فَسَيَقُولُونَ
- Then they will say
- তখন অচিরেই তারা বলবে
- l-lahu
- ٱللَّهُۚ
- "Allah"
- "আল্লাহই"
- faqul
- فَقُلْ
- Then say
- তাহলে বলো
- afalā
- أَفَلَا
- "Then will not
- "কি তবুও না
- tattaqūna
- تَتَّقُونَ
- you fear (Him)?"
- (সত্য বিরোধিতায়) তোমরা বিরত থাকবে"
Transliteration:
Qul mai yarzuqukum minas samaaa'i wal ardi ammany yamlikus sam'a wal absaara wa mai yukhrijul haiya minal maiyiti wa yikhrijul maiyita minal haiyi wa mai yudabbirul amr; fasa yaqooloonal laah; faqul afalaa tattaqoon(QS. al-Yūnus:31)
English Sahih International:
Say, "Who provides for you from the heaven and the earth? Or who controls hearing and sight and who brings the living out of the dead and brings the dead out of the living and who arranges [every] matter?" They will say, "Allah," so say, "Then will you not fear Him?" (QS. Yunus, Ayah ৩১)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
তাদের জিজ্ঞেস কর, ‘আকাশ আর যমীন হতে কে তাদের জীবিকার ব্যবস্থা করে? কিংবা শ্রবণশক্তি ও দর্শনশক্তি কার মালিকানাধীন? আর মৃত থেকে জীবিতকে কে বের করেন আর কে মৃতকে জীবিত থেকে বের করেন? যাবতীয় বিষয়ের শাসন ও নিয়ন্ত্রণ কার অধীনস্থ?’ তারা বলে উঠবে, ‘‘আল্লাহ’’। তাহলে তাদেরকে বল, ‘তবুও তোমরা তাক্বওয়াহ অবলম্বন করবে না?’ (ইউনুস, আয়াত ৩১)
Tafsir Ahsanul Bayaan
তুমি বল, ‘তোমাদেরকে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী হতে রুযী দান করে কে? অথবা কর্ণ ও চক্ষুসমূহের মালিক কে? আর মৃত হতে জীবন্ত এবং জীবন্ত হতে মৃত বের করে কে? আর সকল বিষয় নিয়ন্ত্রণ করে কে?’ তারা বলবে, ‘আল্লাহ।’[১] অতএব তুমি বল, ‘তাহলে কেন তোমরা সাবধান হও না?’
[১] এই আয়াত দ্বারাও পরিষ্কার বুঝা যায় যে, মুশরিকরা আল্লাহ তাআলাকে মালিক, সৃষ্টিকর্তা, প্রতিপালক এবং তাঁকে বিশ্ব-পরিচালক হিসাবে স্বীকার করত। কিন্তু স্বীকারের পরেও যেহেতু তারা তাঁর একতত্ত্ববাদে অন্যদেরকে শরীক করত, তার ফলে আল্লাহ তাআলা তাদেরকে জাহান্নামের জালানী বলে ঘোষণা দিয়েছেন। বর্তমানে অনেক ঈমানের দাবীদারও উক্ত তওহীদে উলুহিয়্যার অস্বীকারকারী। "তাদের অন্তরগুলি পরস্পর সাদৃশ্যপূর্ণ।" আল্লাহ তাদেরকে হিদায়াত করুন। আমীন।
Tafsir Abu Bakr Zakaria
বলুন, ‘কে তোমাদেরকে আসমান ও যমীন থেকে জীবনোপকরণ সরবারহ করেন অথবা শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি কার কর্তৃত্বাধীন [১], জীবিতকে মৃত থেকে কে বের করেন এবং মৃতকে কে জীবিত হতে কে বের করেন এবং সব বিষয় কে নিয়ন্ত্রণ করেন?’ তখন তারা অবশ্যই বলবে, ‘আল্লাহ্’। সুতরাং বলুন, ‘তবুও কি তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করবে না [২]?’
[১] অর্থাৎ যিনি তোমাদেরকে শোনার শক্তি ও দেখার শক্তি দান করেছেন তিনি যদি ইচ্ছে করেন সেগুলোকে নিয়ে যেতে পারেন। সেগুলো তোমাদের থেকে ছিনিয়ে নিতে পারেন। [ইবন কাসীর] অন্য আয়াতেও আল্লাহ বলেছেন, “বলুন, তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদেরকে দিয়েছেন শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি ও অন্তঃকরণ" [সূরা আল-মুলক; ২৩] আরও বলেন, “বলুন, তোমরা কি ভেবে দেখেছ, আল্লাহ যদি তোমাদের শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নেন এবং তোমাদের হৃদয় মোহর করে দেন তবে আল্লাহ ছাড়া আর কোন প্রকৃত ইলাহ আছে যে তোমাদের এগুলো ফিরিয়ে দেবে?" [সূরা আল-আনআমঃ ৪৬]
[২] আল্লাহ্ তা'আলা এ আয়াতসমূহে মুশরিকদের উপর প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত করছেন যে, তাদেরই স্বীকৃতি মোতাবেক যদি তিনি আল্লাহই একমাত্র রব হয়ে থাকেন, তবে একমাত্র তার ইবাদত কেন করা হবে না? তাই তিনি বলছেন যে, কে তোমাদেরকে আসমান ও যমীন থেকে জীবনোপকরণ সরবরাহ করেন? অর্থাৎ কে আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে তার ক্ষমতায় যমীন ফাটিয়ে তা থেকে বের করে আনেন, “নিশ্চয় আমরা প্রচুর বারি বর্ষণ করি, তারপর আমরা যমীনকে যথাযথভাবে বিদীর্ণ করি, অতঃপর তাতে আমরা উৎপন্ন করি শস্য; আংগুর, শাক-সব্জি, অনেক গাছবিশিষ্ট উদ্যান, ফল এবং গবাদি খাদ্য” [সূরা আবাসাঃ ২৫-৩১] তিনি ছাড়া কি আর কোন ইলাহ আছে? এ প্রশ্নের উত্তরে তারা অবশ্যই বলবে যে, এটা শুধু আল্লাহ্ই করে থাকেন। অন্য আয়াতেও আল্লাহ্ বলেন, “এমন কে আছে, যে তোমাদেরকে রিয্ক দান করবে, যদি তিনি তার রিয্ক বন্ধ করে দেন ? " [সূরা আল-মুলক; ২১]।
Tafsir Bayaan Foundation
বল, ‘আসমান ও যমীন থেকে কে তোমাদের রিয্ক দেন? অথবা কে (তোমাদের) শ্রবণ ও দৃষ্টিসমূহের মালিক? আর কে মৃত থেকে জীবিতকে বের করেন আর জীবিত থেকে মৃতকে বের করেন? কে সব বিষয় পরিচালনা করেন’? তখন তারা অবশ্যই বলবে, ‘আল্লাহ’। সুতরাং, তুমি বল, ‘তারপরও কি তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করবে না’?
Muhiuddin Khan
তুমি জিজ্ঞেস কর, কে রুযী দান করে তোমাদেরকে আসমান থেকে ও যমীন থেকে, কিংবা কে তোমাদের কান ও চোখের মালিক? তাছাড়া কে জীবিতকে মৃতের ভেতর থেকে বের করেন এবং কেইবা মৃতকে জীবিতের মধ্য থেকে বের করেন? কে করেন কর্ম সম্পাদনের ব্যবস্থাপনা? তখন তারা বলে উঠবে, আল্লাহ! তখন তুমি বলো তারপরেও ভয় করছ না?
Zohurul Hoque
বলো -- ''কে তোমাদের জীবিকা দান করে মহাকাশমন্ডল ও পৃথিবী থেকে? অথবা শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি কার কর্তৃত্বাধীন? আর কে মৃত থেকে জীবিতকে নির্গত করে ও জীবিত থেকে মৃতকে নির্গত করে? আর কে বিষয়-আশয় নিয়ন্ত্রণ করে?’’ তখন তারা বলবে -- ''আল্লাহ্।’’ তাহলে বলো -- ''তবে কেন তোমরা ধর্মপরায়ণতা অবলন্বন করো না?’’