কুরআন মজীদ সূরা ইউনুস আয়াত ১৭
Qur'an Surah Yunus Verse 17
ইউনুস [১০]: ১৭ ~ শব্দ অনুবাদ দ্বারা শব্দ
فَمَنْ اَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرٰى عَلَى اللّٰهِ كَذِبًا اَوْ كَذَّبَ بِاٰيٰتِهٖۗ اِنَّهٗ لَا يُفْلِحُ الْمُجْرِمُوْنَ (يونس : ١٠)
- faman
- فَمَنْ
- So who
- অতএব কে
- aẓlamu
- أَظْلَمُ
- (is) more wrong
- অধিক সীমালঙ্ঘনকারী (হতে পারে)
- mimmani
- مِمَّنِ
- than he who
- (তার) চেয়ে যে
- if'tarā
- ٱفْتَرَىٰ
- invents
- রচনা করে
- ʿalā
- عَلَى
- against
- উপর
- l-lahi
- ٱللَّهِ
- Allah
- আল্লাহ
- kadhiban
- كَذِبًا
- a lie
- মিথ্যা
- aw
- أَوْ
- or
- বা
- kadhaba
- كَذَّبَ
- denies
- মিথ্যারোপ করে
- biāyātihi
- بِـَٔايَٰتِهِۦٓۚ
- His Signs?
- সম্পর্কে তাঁর নিদর্শনগুলো
- innahu
- إِنَّهُۥ
- Indeed
- নিশ্চয়ই তা
- lā
- لَا
- not
- না
- yuf'liḥu
- يُفْلِحُ
- will succeed
- সফলকাম হয়
- l-muj'rimūna
- ٱلْمُجْرِمُونَ
- the criminals
- অপরাধীরা
Transliteration:
Faman azlamu mimmanif taraa 'alal laahi kaziban aw kazzaba bi Aayaatih; innahoo laa yuflihul mujrimoon(QS. al-Yūnus:17)
English Sahih International:
So who is more unjust than he who invents a lie about Allah or denies His signs? Indeed, the criminals will not succeed. (QS. Yunus, Ayah ১৭)
তাফসীর তাইসীরুল কুরআন (Taisirul Quran):
তার চেয়ে বড় যালিম আর কে হতে পারে যে মিথ্যা রচনা ক’রে আল্লাহর নামে চালিয়ে দেয় অথবা আল্লাহর আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলে ঘোষণা করে; নিশ্চিতই অপরাধীরা সাফল্য লাভ করতে পারে না। (ইউনুস, আয়াত ১৭)
Tafsir Ahsanul Bayaan
অতএব সে ব্যক্তির চেয়ে অধিক অত্যাচারী কে হবে, যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে অথবা তাঁর আয়াতসমূহকে মিথ্যা মনে করে? নিঃসন্দেহে এমন অপরাধিগণ সফলকাম হবে না।
Tafsir Abu Bakr Zakaria
অতএব যে ব্যক্তি আল্লাহ্ সম্পর্কে মিথ্যা রচনা বা আল্লাহর আয়াতসমূহে মিথ্যারোপ করে তার চেয়ে বড় যালিম আর কে [১]? নিশ্চয় অপরাধীরা সফলকাম হবে না [২]।
[১] অর্থাৎ তার চাইতে বড় যালেম আর কেউ নেই যে আল্লাহর উপর মিথ্যা রটনা করে এবং তাঁর বাণী পরিবর্তন করে। আর তিনি যা নাযিল করেছেন তার সাথে কোন কিছু যোগ করে দেয়। অনুরূপভাবে তোমাদের থেকে বড় যালেমও আর কেউ হবে না যদি তোমরা কুরআনকে অস্বীকার কর এবং আল্লাহর উপর মিথ্যা অপবাদ দাও এবং বল যে, এটা আল্লাহর কালাম নয়। এটাই আল্লাহ তা'আলা তার রাসূলকে নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে তিনি তাদেরকে এটা জানিয়ে দেন। [কুরতুবী]
[২] অর্থাৎ যারা আল্লাহর উপর মিথ্যাচার করে তারা কখনো সফলকাম হবে না। তাদের কর্মকাণ্ড মানুষের কাছে মিথ্যা হিসেবে বিবেচিত হবেই। মূলত; নবী সত্য বা মিথ্যা এটা জানার বিভিন্ন পদ্ধতি বিদ্যমান। তন্মধ্যে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, দু’জনের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, কথাবার্তা, চাল-চলন ইত্যাদি তুলনা করা। বিবেকবান মাত্রই এ কাজটি সহজে করতে পারে। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে মুসাইলামা কাৰ্য্যাবের কোন তুলনা কি চলে? আমর ইবনে আস একবার মুসাইলামার কাছে গেল। মুসাইলামা তার পুরাতন বন্ধু ছিল। আমর তখনও ইসলাম গ্রহণ করেনি। তখন মুসাইলামা তাকে জিজ্ঞাসা করলঃ হে আমর! তোমাদের লোকের (অর্থাৎ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর) উপর এ সময়ে কি নাযিল হয়েছে? আমর ইবনে "আস জবাবে বললঃ আমি তার সাথীদের একটি সূরা পড়তে শুনেছি। মুসাইলামা বল্লঃ সেটা কি? আমর বললঃ
(وَ الۡعَصۡرِ ۙ﴿۱﴾ اِنَّ الۡاِنۡسَانَ لَفِیۡ خُسۡرٍ ۙ﴿۲﴾ اِلَّا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَ تَوَاصَوۡا بِالۡحَقِّ ۬ۙ وَ تَوَاصَوۡا بِالصَّبۡرِ ﴿۳﴾)
সূরাটি শুনে মুসাইলামা কিছুক্ষণ চিন্তা করতে থাকলো, তারপর বললোঃ আমার উপরও অনুরূপ নাযিল করা হয়েছে। আমর বললোঃ সেটা কি? সে বললঃ
(يَاوَبَر، اِنَّمَا اَنْتَ اُذُنَانِ وَصَدَدُ، وَسَائِرُكَ حَقَرٌ نَقَرٌ) ,
তারপর মুসাইলামা বাহাদুরী নেয়ার আশায় আমরের দিকে তাকিয়ে বললোঃ আমর! কেমন লাগলো? তখন আমর বললোঃ আল্লাহর শপথ করে বলছি, তুমি অবশ্যই এটা জানো যে, আমি জানি, তুমি মিথ্যা বলছ”। [ইবন কাসীর; ইবন রাজাব, জামেউল উলুম ওয়াল হিকাম; ১১২] এটাই যদি একজন কাফেরের বিশ্লেষণ তাহলে মুমিন কত সহজেই সত্য নবী ও মিথ্যা নবীর মধ্যে পার্থক্য করতে পারবে তা বলাই বাহুল্য। অপরদিকে আমরা সত্য নবীর ব্যাপারেও তার সততার সাক্ষ্য খুব সহজভাবেই দেখতে পাই। আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম বলেনঃ “যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় আগমণ করলেন তখন লোকেরা চতুর্দিক থেকে ধেয়ে আসলো। আমিও তাদের সাথে আসার পর যখন আমি তাকে দেখলাম তখনি বুঝতে পারলাম যে, তার চেহারা কোন মিথু্যক লোকের চেহারা নয়। তখন আমি প্রথম যে কথা কয়টি শুনেছিলাম তা হলোঃ হে মানব সম্প্রদায়! সালামের প্রসার কর, খাবার খাওয়াও, আত্মীয়তার সম্পর্ক ঠিক রাখো এবং রাতে মানুষেরা যখন ঘুমন্ত থাকে তখন সালাত আদায় কর, ফলে তোমরা প্রশাস্তির সাথে বা সালামের সাথে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে”। [মুস্তাদরাকে হাকেমঃ ৪২৮৩]
Tafsir Bayaan Foundation
অতএব যে আল্লাহর উপর মিথ্যা রটনা করে অথবা তাঁর আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলে, তার চেয়ে বড় যালিম কে ? নিশ্চয় অপরাধীরা সফল হবে না।
Muhiuddin Khan
অতঃপর তার চেয়ে বড় জালেম, কে হবে, যে আল্লাহর প্রতি অপবাদ আরোপ করেছে কিংবা তাঁর আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলে অভিহিত করছে? কস্মিনকালেও পাপীদের কোন কল্যাণ হয় না।
Zohurul Hoque
কে তবে বেশি অন্যায়কারী তার চাইতে যে আল্লাহ্ সম্পর্কে মিথ্যা রচনা করে অথবা তাঁর নির্দেশসমূহ প্রত্যাখ্যান করে? নিঃসন্দেহ অপরাধীরা সফলকাম হবে না।